Home Second Lead চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি কে হচ্ছেন ? আব্বাস না রিয়াজ ?

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি কে হচ্ছেন ? আব্বাস না রিয়াজ ?

নাজমুল হোসেন

চট্টগ্রাম: আর মাত্র একদিন মাঝখানে। এরপর বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর ) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন। নির্বাচনী প্রচারনাও জমজমাট।

ভোটারদের দৃষ্টি প্রধানত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের দিকে। অবশ্য এই দু’টি পদে পরিবর্তন হচ্ছে, না বর্তমান দু’জনই বহাল থাকছে তা ইতিমধ্যে আঁচ করে ফেলেছেন ভোটাররা। প্রেসক্লাব এবং সাংবাদিক ইউনিয়নের ভোটে বিভিন্ন সমীকরণ কাজ করে। ব্যক্তিগত ইমেজ এবং গোষ্ঠিগত নানা হিসাব-নিকাশের ওপর নির্ভর  করে ফলাফল।

প্রেসক্লাব নির্বাচনে দৃশ্যত কোন প্যনেল নেই। তবে, ভিতরে ভিতরে একটি প্যানেলের ব্যাপারে জানিয়ে দেয়া হয়েছে নিজস্ব সাপোর্টারদের।

সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন বর্তমান সভাপতি এ টি এন বাংলার ব্যুরো প্রধান আলী আব্বাস। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিশেষ প্রতিনিধি ও সিইউজের সাবেক সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী। তিনি এই প্রথম নির্বাচন করছেন প্রেসক্লাবে।

আলী আব্বাস ইতিপূর্বেও সভাপতি ছিলেন প্রেসক্লাবের। বিগত নির্বাচনে তিনি জয়ী হন ১২৭ ভোটে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দৈনিক পূর্বকোণের এজাজ ইউসুফী পেয়েছিলেন ৪৯ ভোট।

সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন চ্যানেল আইয়ের ব্যুরো প্রধান চৌধুরী ফরিদ। তিনি বর্তমান সাধারণ সম্পাদক। তার প্রতিদ্বন্দ্বী দৈনিক সত্যবাণীর নির্বাহি সম্পাদক কাজি মহসিন।

ক্লাবে কখনও নির্বাচন করেননি, হঠাৎ একেবারে সভাপতি পদে কেন জানিনা: আলী আব্বাস

সভাপতি পদপ্রার্থী ও বর্তমান সভাপতি আলী আব্বাস বিজনেসটুডে ২৪ প্রতিনিধির সাথে সাক্ষাৎকারে প্রেসক্লাবের একাধিকবারের সভাপতি হিসেবে সফলতা কি জানতে চাইলে তিনি বলেন,  আমার বড় সফলতা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ক্লাবে এসেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধুর মুরাল উন্মোচন করেন। তিনি ৭ কোটি টাকা দিয়ে বঙ্গবন্ধু হল করে দিয়েছেন। তা বাস্তবায়ন করেছেন তৎকালীন কমিটির সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী এবং পরবর্তীতে  কলিম সরওয়ার-শুকলাল কমিটি।   আমরা পিকনিক করেছি। পহেলা বৈশাখ পালন করেছি আমি। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে সব কর্মসূচি সফলতার সাথে পালন করেছি। ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রনব মুখার্জির স্মরণ সভা করেছি।

তিনি বলেন, প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রে বলা আছে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে। সেই অনুসারে শতভাগ নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি।

তিনি জানান, প্রেসক্লাবের সাথে ইউনিয়নের সব সময় দূরত্ব থাকতো অতীতে।  এখন তা নেই। সব কর্মসূচি প্রেসক্লাব এবং ইউনিয়ন যৌথভাবে পালন করি । এটা আমার বড় সফলতা। আমার স্বপ্ন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর করার। আশা করি তা করবো। দিন দিন সদস্য বাড়ছে ক্লাবে। আগে সদস্য ছিল ১২০ জন। বর্তমানে ২৫৬ জন। তাদের দু’জন মারা গেছেন। কিন্তু আমাদের আয় নেই। আয়ের যে উৎস তা অত্যন্ত সীমিত। আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেবো। যেমন কাউকে লাইফ মেম্বার করা হলে ২ লাখ টাকা পাওয়া যায়। সে রকম কিছু করার ইচ্ছা আছে।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রিয়াজ হায়দার চৌধুরীকে কিভাবে মূল্যায়ন করেন জানতে চাইলে আলী আব্বাস বলেন,

তিনি বাংলাদেশের একজন অবিসংবাদিত সাংবাদিক এবং দক্ষ ট্রেড ইউনিয়নিস্ট। তিনি ক্লাবে কোনোদিন  ইলেকশন করেননি, কোন পদে দাঁড়াননি । প্রথমবারের মত সভাপতি পদে কিজন্য নির্বাচন করছেন  তা তিনি জানেন, আমি জানিনা। তিনি বিএফইউজের সহ সভাপতি।

আলী আব্বাস বলেন, আমি দক্ষ সাংবাদিক না কিন্তু আমি একজন দক্ষ সংগঠক। যখন গোটা দেশ করোনায় অচল ছিল আমরা ছিলাম সচল। আমাদের ক্লাব একদিনের জন্যও বন্ধ  হয়নি। ক্লাবের সদস্যরা খুব ভাল জানেন সে সময় কি করেছি সেটা।

 

ইউনিয়ন করে প্রেসক্লাবের দায়িত্ব পাওয়া সদস্যদের জন্য ইতিবাচক: রিয়াজ

সভাপতি পদপ্রার্থী রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বললেন, সাংবাদিক ইউনিয়ন করে প্রেসক্লাব এর দায়িত্ব পেলে তা হবে প্রেসক্লাবের সম্মানিত সদস্যদের জন্য ইতিবাচক । কেননা আমি তৃণমূল থেকে সাংবাদিক ইউনিয়ন করে কেন্দ্র পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছি। কেন্দ্রে আমার দায়িত্বের মেয়াদ একদম শেষ পর্যায়ে । কাজেই একই পদে পুনরায় ভোট না করে নতুন নেতৃত্বের সুযোগ দিয়ে এবং নিজে ইউনিয়নের পাঠ চুকিয়ে নিজের জন্মস্থান ভূমিতে প্রিয় প্রতিষ্ঠান প্রেসক্লাবের দায়িত্ব নিতে চাই। যদি সুযোগ পাই , আমার সাথে ঢাকাসহ সারা দেশের সাংবাদিকদের এবং সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেস ক্লাবগুলোর যেই যোগাযোগ আছে, সেটিকে কাজে লাগাতে চাই। আমি বিশ্বাস করি, আমার বিগত দিনের সাংবাদিক ইউনিয়নের পথ চলার অভিজ্ঞতা চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আমি পূর্ণাঙ্গভাবে দরদ দিয়ে কাজে লাগাতে পারবো । আশা করি এবার প্রেসক্লাবেও সেরকম দরদ দিয়ে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে পারব।

প্রেসক্লাবে অতীতের সফল নেতৃত্বের অনেক অসমাপ্ত কাজ রয়েছে। অনেকেই নিজের ইচ্ছে বাস্তবায়ন করতে পারেননি সুযোগ না পেয়ে, অথচ তাঁদের অনেক স্বপ্ন ছিল এই ক্লাবকে ঘিরে । আবার অনেকেই পর্যাপ্ত মেয়াদ না পেয়ে কিংবা আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে যাওয়ায় স্বপ্ন পুরণ করতে পারেননি। তাঁদের সেই সব স্বপ্নকে ধারণ করে আমার নিজের কিছু স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে চাই আমি।

আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী  আলী আব্বাস-এর একাধিকবারে সভাপতি থাকার কার্যক্রমকে কিভাবে মূল্যায়ণ করেন? এ প্রশ্নের উত্তরে বলেন,  দেখুন, আলী আব্বাস ভাই আমার সিনিয়র। আমি যদি ভুল না করে থাকি, তো এটি বলতে পারি যে , উনি আগে অন্তত এক যুগ ধরে সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন। এই সময়কালের ভালো-মন্দ সবকিছুই সম্মানিত সদস্যরাই ভালো জানেন । আমি উনার অতীত কর্মকান্ড নিয়ে কোন বিতর্কিত কথা বলতে চাই না। আমি চাই প্রেসক্লাবে কাজ করতে আমার একটিবার সুযোগ । ইউনিয়নের গেল দুই দশকের আমার অভিজ্ঞতাকে আমি প্রিয় এই প্রেসক্লাবে শতভাগ কাজে লাগাতে চাই। আশা করছি, সুযোগ পেলেই আমি সম্মানিত সদস্য সাংবাদিক বন্ধুসহ  ক্লাবের সাথে জড়িত সবার মনের মত একটি প্রতিষ্ঠান উপহার দিতে পারব ।