বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
সংবাদসংস্থা সিএনবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন স্বাস্থ্য সচিব অ্যালেক্স অ্যাজার বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফাইজারের টিকার বিতরণ শুরু হতে পারে ডিসেম্বর থেকেই।
তৃতীয় পর্বের ট্রায়াল রিপোর্টে ফাইজার দেখিয়েছে তাদের টিকা ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই কার্যকরী হয়েছে। টিকার ডোজে কোনও জটিল শারীরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এর পরের ধাপ হল টিকার সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট খুঁটিয়ে দেখা। সেই রিপোর্ট সবিস্তারে দেখবে ভ্যাকসিন রেগুলেটারি কমিটি। টিকা সুরক্ষিত, এ ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার পরেই আমজনতাকে টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
জার্মান বায়োটেকনোলজি ফার্ম বায়োএনটেক এসই-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কোভিড ভ্যাকসিন বানিয়েছে ফাইজার। এই আরএনএ ভ্যাকসিন দেহকোষকে ভাইরাল প্রোটিন তৈরিতে বাধ্য করে যাতে তার প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি শরীরেই তৈরি হয়ে যায়। এই গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন জার্মানির বায়োএনটেকের অধ্যাপক উগার সাহিন। এই আরএনএ ভ্যাকসিন ক্যানডিডেটের নাম BNT162।
গত মে মাস থেকেই টিকার ট্রায়াল শুরু করেছিল ফাইজার ও বায়োএনটেক। প্রথম দুই পর্বে অল্প সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবকের উপর টিকার ডোজও কার্যকরী হয়েছিল বলে দাবি করেছিল ফাইজার। তৃতীয় পর্বে প্রায় ৩০ হাজার জনকে টিকার ইঞ্জেকশন দিয়ে সেই ট্রায়ালের রিপোর্ট সামনে আনে মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি। ট্রায়াল রিপোর্টে বলা হয়, টিকার ডোজে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই স্বেচ্ছাসেবকের শরীরের ইমিউন পাওয়ার বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জেগে উঠেছে। বি-কোষ থেকে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে রক্তে যা অ্যান্টিবডি বেসড ইমিউন রেসপন্স বা অ্যাডাপটিভ ইমিউন রেসপন্স তৈরি করবে। একই সঙ্গে সক্রিয় টি-কোষও। এই টি-কোষ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও বাড়াবে এবং দীর্ঘ সময় ধরেই ভাইরাস প্রতিরোধী সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করবে শরীরে।
ফাইজারের চিফ একজিকিউটিভ অফিসার অ্যালবার্ট বোরলা জানিয়েছেন, ১০ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজের জন্য মার্কিন সরকারের সঙ্গে ১৯৫ কোটি ডলারের চুক্তি হয়েছে। মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং এমার্জেন্সি ইউজ অথরাইজেশন (ইইউএ)-এর অনুমতি পেলে ডিসেম্বর থেকেই টিকার ডোজ দেওয়া শুরু হতে পারে। প্রথম ধাপে প্রতি মাসে ২ কোটি করে টিকার ডোজ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাঁচ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার মতো ডোজ আগে তৈরি হবে। পরে আরও ৫০ কোটির জন্য ডোজ তৈরি হবে।
মার্কিন স্বাস্থ্য সচিব বলেছেন, ডাক্তার, নার্স তথা স্বাস্থ্যকর্মী ও জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের আগে টিকা দেওয়া হবে। এরপরে প্রবীণদের টিকা দেওয়া হতে পারে। টিকার ডোজে সংক্রমণ পুরোপুরি কমবে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি এখনও। মৃদু সংক্রমণ বা সঙ্কটাপন্ন কোভিড রোগীদের শরীরে টিকার ডোজ কীভাবে কাজ করবে সে বিষয়েও তথ্য মেলেনি, তবে দাবি মৃত্যুর ঝুঁকি কমবে।
ফাইজার দাবি করেছে, এইডসের রোগী, হেপাটাইটিস বি ও হেপাটাইটিস সি রোগীর উপরেও টিকার ডোজের পরীক্ষা চলছে। জটিল রোগাক্রান্তদের শরীরেও টিকার ডোজ কার্যকরী হবে বলেই আশা ফাইজার ও জার্মান সংস্থা বায়োএনটেকের।