Home আন্তর্জাতিক ফাইজারের টিকা হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করছে

ফাইজারের টিকা হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করছে

ফাইজারের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে চর্চা চলছে আন্তর্জাতিক মহলে। নরওয়েতে টিকার ডোজ নেওয়ার পরে ২৩ জন প্রবীণের মৃত্যুর ঘটনায় হইচই পড়ে যায়। টিকার সুরক্ষা কতটা সে নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। তবে এর মধ্যেই ফাইজারের টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নতুন রিপোর্ট দিয়েছে ইজরায়েলের স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ইজরায়েলের দাবি, ফাইজারের টিকার ডোজে সংক্রমণের হার কমে গেছে দেশে। করোনা স্ট্রেনের হিউম্যান ট্রান্সমিশন অর্থাৎ এক শরীর থেকে অন্য শরীরে ছড়িয়ে পড়ার হার অনেক কম। মনে করা হচ্ছে একটা বড় অংশের মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে উঠছে। হার্ড ইমিউনিটির পথে যাচ্ছে ইজরায়েল।

গত বছর ২০ ডিসেম্বর থেকে মার্কিন ফার্মা জায়ান্ট ফাইজার ও তাদের সহযোগী জার্মান রিসার্চ সেন্টার বায়োএনটেক গণহারে টিকাকরণ শুরু করে ইজরায়েলে। সে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দাবি, ডিসেম্বর থেকে আজ অবধি ফাইজারের টিকার ডোজ প্রায় ৯৯ শতাংশ কার্যকরী হয়েছে। সংক্রমণে মৃত্যুহার কম। কোনও জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি বলেই দাবি স্বাস্থ্য আধিকারিকদের।

ব্রিটেনে প্রথম টিকাকরণ শুরু করে ফাইজার। পরে আমেরিকায়। আর এখন বিশ্বের অনেক দেশেই টিকা দিচ্ছে মার্কিন ফার্মা জায়ান্ট ফাইজার ও জার্মান রিসার্চ ইনস্টিটিউট বায়োএনটেক। ব্রিটেন প্রথম জানিয়েছিল, ফাইজারের টিকার ডোজে তীব্র অ্যালার্জি দেখা যাচ্ছে কয়েকজনের শরীরে। টিকার ডোজে সে দেশের দুই স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে তীব্র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার পরেই এই কথা জানানো হয়।  তবে ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রক দাবি করে, ওই দুই স্বাস্থ্যকর্মীর আগে থেকেই অ্যালার্জির ধাত ছিল, তাই টিকার ডোজে অ্যাডভার্স সাইড এফেক্টস দেখা গিয়েছে।

পরে আমেরিকাও দাবি করে টিকার ডোজে এক স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে তীব্র অ্যালার্জি বা অ্যানাফিল্যাক্সিস দেখা গিয়েছে। অ্যানাফিল্যাক্সিস হল ‘সিভিয়ার অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন’ । সারা শরীরে র‍্যাশ হযে যায়, বমিভাবে, মাথাব্যথা দেখা দেয়। রক্তচাপ আচমকা কমে যেতে পারে, পালস রেট কমে যায়। অ্যালার্জি তীব্রভাবে ছড়িয়ে পড়ে মৃত্যুও হতে পারে। তাই অ্যালার্জির ধাত থাকলে এই টিকা নেওয়া যাবে না বলে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল।

সমস্যা তৈরি হয় নরওয়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট সামনে আসার পরে। জানা যায়, টিকার ডোজ নেওয়ার পরেই ২৩ জন প্রবীণ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তবে টিকার ডোজেই এই মৃত্যু কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ইজরায়েল দাবি করেছে, সার্স-কভ-২ ভাইরাসের যে হারে মিউটেশন বা জিনগত পরিবর্তন শুরু হয়েছিল, সেটা এখন কমেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। গবেষকের দাবি, এখনও অবধি একটা ক্লাস্টারের মধ্যে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ ওই গোষ্ঠীর মানুষদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে উঠছে। যে এলাকাগুলিতে করোনা আক্রান্তদের রক্তে অ্যান্টিবডি মিলেছে সেখানে ধীরে ধীরে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার কমবে। তার কারণ, কোনও এলাকার মোট জনসংখ্যার একটা অংশের মধ্যে যদি রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে উঠতে শুরু করে তাহলে বাকিরাও অনেকটাই সুরক্ষিত হয়ে যান। কারণ ভাইরাস আর বেশি মানুষের মধ্যে সংক্রামিত হতে পারে না। একটা পর্যায়ের পরে গিয়ে ভাইরাল স্ট্রেন দুর্বল হতে থাকে। নির্মূল না হলেও নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। সংক্রমণ বৃদ্ধির হার কমে। এইভাবেই গড়ে ওঠে হার্ড ইমিউনিটি। ইজরায়েল এই হার্ড ইমিউনিটির পথেই যেতে চলেছে বলে দাবি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক