Home সারাদেশ ফেসবু্কে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা

ফেসবু্কে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা

নয়ন


ময়মনসিংহ থেকে তাপস কর: গফরগাঁওয়ে এক যুবক আত্মহত্যা করল ফেসবুকেস্ট্যাটাস দিয়ে। একটি আপত্তিকর পোস্ট দেয়ার কারণে নয়ন (২০) নামে যুবকটি  গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তার মৃত্যুর পর আপত্তিকর পোস্টটি ডিলিট করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে উপজেলার বারবাড়িয়া ইউনিয়নের বাড়া গ্রামের ফকিরবাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে। বাড়া ফকিরবাড়ির গ্রাম পুলিশ  সিরাজুল হকের ছেলে নয়ন। তার দুই ভাই রেজাউল ও আলম সৌদি প্রবাসী। নয়নও সৌদি প্রবাসী ছিল । এক বছর আগে দেশে ফেরত আসে।

আত্মহত্যার ৫ ঘণ্টা আগে নয়ন নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে ‘সবার কাছে একটাই অনুরোধ যদি কোন ভুল করে থাকি, প্লিজ মাফ করে দিবেন’ এবং অফলাইন, বিদায় ফেসবুক ইত্যাদি স্ট্যাটাস দেয়। এর আগে তাকে নিয়ে একটি ফেইক আইডি থেকে ফেসবুকে করা আপত্তিকর পোষ্টটি প্রচার হলে গত ১৪ জুলাই থেকে ৯ দিন সে বন্ধুবান্ধব, রাজনৈতিক সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজন সবার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে বাড়িতে অবস্থান করছিল।

পুলিশ, এলাকাবাসী, নিহতের পরিবারের লোকজন সূত্রে জানা গেছে, সৌদি ফেরত,  নয়নের সাথে পাশ্ববর্তী পাকাটি গ্রামের ১৯ বছর বয়সী এক স্বামী পরিত্যক্তা তরণীর ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে নয়নকে ওই তরুণী তাদের এলাকায় যেতে বলে। ১৪ জুলাই সন্ধ্যা ৭টার দিকে নয়ন পাকাটি গ্রামের বাংলাবাজার এলাকায় গেলে স্থানীয় নিশা, রাজিব ও রাজুর নেতৃত্বে একদল যুবক নয়নের পথরোধ করে। বেদম প্রহার করে ওই তরুনীর কাছে নিয়ে জোরপূর্ব ছবি তোলে ও ভিডিও করে বলে নয়নের এক চাচা ইউসুফ(৪০)জানায়। পরে জরিমানা আদায় করে ছেড়ে দেয় এবং এই ছবি ও ভিডিও দিয়ে একটি ফেইক আইডি থেকে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেয় ।  নয়নকে নিয়ে আপত্তিকর এই পোস্টটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ভাইরাল হয়। এই ঘটনায় লোকলজ্জায় নয়ন গত ৯ দিন ধরে নিজের বাড়িতেই নিজেকে বন্দি করে রাখে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন হলে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে নিজের ঘরের আড়ার সাথে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নয়ন।

এদিকে এই মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে নয়নের পরিবারের লোকজন, এলাকাবাসী, রাজনৈতিক সহকর্মী ও বন্ধুরা। নয়নের মৃত্যুর পর আপত্তিকর পোষ্টটি  টাইমলাইন থেকে ডিলিট করে দেয়া হয়েছে।

গফরগাঁও থানা পুলিশ শুক্রবার দুপুরে নয়নের লাশ উদ্ধার ও ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতার মর্গে পাঠায়। ওসি অনুকূল সরকার জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।