নিপীড়িত বাঙালির মুক্তির জন্য গর্জে উঠেছিল একটি তর্জনী। তাঁর বজ্রবাণীতে জেগে উঠেছিল সাত কোটি বাঙালি। যিনি বাঙালিদের জন্য এনে দিয়েছেন স্বাধীন ভূখণ্ড। নিজের মতো করে এগিয়ে চলার পথ দেখিয়েছেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির প্রাণের স্পন্দন। দেশবাসী বঙ্গবন্ধুকে দেখেছে আন্দোলন সংগ্রামের অপ্রতিরুদ্ধ মানুষ হিসেবে। কিন্তু এর বাইরে কেমন মানুষ ছিলেন তিনি? কীভাবে বেড়ে উঠেছেন? তাঁর জীবনে কী প্রেম এসেছিল? সন্তানদের সাথে তিনি সময় কাটাতেন কীভাবে? এমন অসংখ্য প্রশ্ন ঘুরপাক খায় সব বয়সের মানুষের। এমন অসংখ্য প্রশ্নর উত্তর এবার মিলবে এবং চোখের সামনে ভেসে উঠবে ‘মুজিব—একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী অবলম্বনে নির্মিত সিনেমা “মুজিব: একটি জাতির রূপকার” আগামী ১৩ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। আর ভারতে মুক্তি পাবে ২৭ অক্টোবর। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন ভারতের খ্যাতিমান নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল। বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ। ফজিলাতুন নেছা মুজিবের চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা, শেখ হাসিনার চরিত্রে নুসরাত ফারিয়া, তাজউদ্দীন আহমদের চরিত্রে রিয়াজ আহমেদ। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিলারা জামান, চঞ্চল চৌধুরী, সিয়াম আহমেদ, জায়েদ খান, খায়রুল আলম সবুজ, ফেরদৌস আহমেদ, দীঘি, রাইসুল ইসলাম আসাদ, গাজী রাকায়েত, তৌকীর আহমেদ, মিশা সওদাগরসহ দেশের শতাধিক শিল্পী।
“মুজিব: একটি জাতির রূপকার”প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানান, এই সিনেমাটি জাতির জন্য ইতিহাসের একটি দলিল। এটি একটি সিনেমা নয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বায়োপিক। ১৫ আগস্টের ঘটনা কখনও চিত্রায়িত হয়নি, কিন্তু এই সিনেমায় সেই দৃশ্য চিত্রায়িত হয়েছে। সেই মর্মান্তিক দৃশ্যের মাধ্যমেই সিনেমাটি শেষ হয়েছে। এই দৃশ্য দেখা খুবই কষ্টের।
বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করা আরিফিন শুভ বলেন, ‘বায়োপিকে অভিনয় করা যেকোনো শিল্পীর জন্য কঠিন। এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি, যেটা বাঙালির কাছে ভীষণ আবেগের একটি চরিত্র। এই আবেগের কারণে অনেক খন্দকার মোশতাকরা আবার অনেক কিছু বলে।’
অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘একজন মানুষ একটা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন, সেই সত্যি ইতিহাস কিছু আমরা দেখতে পাব সিনেমাটিতে।’
এই চলচ্চিত্রে খন্দকার মোশতাক আহমেদ চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু। তিনি বলেন, ‘মুজিব সিনেমাটি আমার কাছে একটি স্বপ্নের নাম, একটি আবেগের নাম।’
২০২১ সালের জানুয়ারিতে ভারতে শুরু হয় “মুজিব: একটি জাতির রূপকার”সিনেমার দৃশ্যধারণের কাজ। শেষ হয় ওই বছরের ডিসেম্বরে। গত বছরের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে প্রথম পোস্টার, ৩ মে দ্বিতীয় পোস্টার এবং ১৯ মে ৭৫তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমার ট্রেলার প্রকাশ করা হয়। চলতি বছরের ৩১ জুলাই সিনেমাটি বাংলাদেশে আনকাট সেন্সর ছাড়পত্র পায়।