বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: চট্টগ্রাম বন্দরে বিরাজমান অচলাবস্থা নিরসনে রাজস্ব ভবন আরও ৬টি আমদানি পণ্যভর্তি কন্টেইনার অফডকে সংরক্ষণের অনুমতি দিয়েছে আজ শনিবার। তবে কতটুকু সফলতা আসবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
বন্দর ব্যবহারকারি, আমদানিকারকসহ বিভিন্ন মহলের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বেসরকারি অফডকসমূহে আরও আইটেম সংরক্ষণের অনুমতি দেয়ার। দেখা গেছে, অফডকে প্রচুর খালি জায়গা পড়ে থাকে, আর বন্দর ইয়ার্ডে কন্টেইনার রাখতে হিমশিম খেতে হয় স্থান সংকুলানের অভাবে। বন্দরে চলমান সংকটজনক অবস্থায় সেই দাবি আরও জোরদার হয়। গত ১৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভা থেকেও সুপারিশ করা হয়েছিল এ ব্যাপারে। বন্দর কর্তৃপক্ষও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়কে তা জানিয়েছে বিবেচনার জন্য। মন্ত্রণালয় থেকে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ জানানো হয়। এর প্রেক্ষিতে শনিবার অনুমতি দেয়া হয়েছে আরও ৬টি আইটেম অফডকে সংরক্ষণের।
অফডকসমূহে বর্তমানে ৩৮টি আইটেম রাখার অনুমোদন রয়েছে। অতিরিক্ত আরও ৬টির অনুমোদন দেয়া হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে। চট্টগ্রাম বন্দরের সংকট বিবেচনায় সাময়িকভাবে এই অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
রাজস্ব ভবন সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের বেসরকারি ১৯টি অফডকে সব ধরনের বীজ, ফাইবার, ঔষধ উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আমদানি করা এবং ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদিত ব্লক লিস্টের পণ্য, ইনসেক্টিসাইড, ফাঙ্গিসাইড, হার্বিসাইড এবং উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানের আমদানি করা টায়ার কর্ড সংরক্ষণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় সচিব ( কাস্টমস নীতি ) মোহাম্মদ মেহরাজ-উল-আলম সম্রাট জানান, ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে এই অনুমোদন।
যোগাযোগ করা হলে শিপিং সংশ্লিষ্টরা অভিমত দেন যে রাজস্ব ভবন থেকে আরও যে ৬টি আইটেম অফডকে রাখার অনুমতি দেয়া হয়েছে তাতে তেমন সফলতার সম্ভাবনা নেই। কারণ, আইটেমগুলোভর্তি কন্টেইনারের পরিমাণ অল্পসল্প। প্রয়োজন আরও পণ্যের অনুমতি দেয়া, যেগুলোর ভলিউম বেশি।
বহুজাতিক শিপিং কোম্পানি পিআইএল-এর বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ইনচার্জ, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের পরিচালক আবদুল্লাহ জহির-এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও অনুরূপ অভিমত ব্যক্ত করেন। বিজনেসটুডে২৪ কে বলেন, আলোচ্য ৬টি আইটেমের পরিমান তেমন বেশি নয়। অফডকগুলোতে প্রচুর জায়গা খালি পড়ে আছে। তার বিপরীতে এই আইটেমগুলো একেবারে কম। বন্দরে জট কমাতে হলে আরও আইটেম রাখার অনুমোদন দেয়া দরকার জরুরি ভিত্তিতে। বন্দরে রেফার প্লাগ পয়েন্ট আর খালি নেই। বিভিন্ন অফডকের রয়েছে রেফার প্লাগ পয়েন্ট। বন্দর থেকে সেখানে রেফার কন্টেইনারসমূহ সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা হলে বেশ কিছুটা সুবিধা বাড়বে।
আবদুল্লাহ জহির অভিমত দেন যে আরও কমার্শিয়াল এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইটেম যোগ করতে হবে রাজস্ব ভবনের অনুমোদন তালিকায়। সেটা হলে তবে সুফল পাওয়া যাবে। এপ্রসঙ্গে উল্লেখ করেন, আরও পণ্য অফডকে নেয়ার অনুমতি দেয়া হলে তাতে সরকারের রাজস্ব হারানোর আশংকা নেই। কারণ, অফডকেও কাস্টমস রয়েছে। তাদের সামনে এসেসমেন্ট ও ডেলিভারি হয়ে থাকে।