ঢাকা: বাংলাদেশ বৃহত্তর অর্থনীতির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে মন্তব্য করে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, ‘আমরা এই অগ্রগতিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির মাইলফলক ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বাংলাদেশের এই অর্জনকে ভারত পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আরও ঐতিহাসিক করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘দুই দেশের ব্যবসায়ীদের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর দুই দেশ যৌথভাবে পালন করতে অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়েছে।’
রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে ভারতীয় হাইকমিশনারের জন্য ইন্ডিয়ান ইমপোর্টার্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (আইআইসিসিআই) আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দোরাইস্বামী এসব কথা বলেন। এ সময় এ লক্ষ্যে তিনি দুই দেশের ব্যবসায়ীদের যৌথভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
এ আয়োজনে সহযোগিতা করেছে দেশের স্বনামখ্যাত আবাসন কোম্পানি রূপায়ণ গ্রুপের প্রিমিয়ার মেগা গেটেড কমিউনিটি ‘রূপায়ণ সিটি’। অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনারকে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দিয়ে সম্মান জানান রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খাঁন মুকুল ও গ্রুপটির ভাইস চেয়ারম্যান মাহির আলী খাঁন রাতুল।
অনুষ্ঠানে প্রায় ১২ মিনিটের বক্তব্যে বিক্রম দোরাইস্বামী বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্ভাবনার দিকগুলো তুলে ধরেন। বাংলাদেশের বেগবান অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিতে ভারত যৌথভাবে কাজ করবে এবং সম্পর্ক আরও উচ্চমাত্রা পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে কৃষি, খাদ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, কানেক্টিভিটিতে বাংলাদেশের অসাধারণ সাফল্য হয়েছে। এসব সেক্টরে একই সঙ্গে কাজ করছে দুই দেশের সরকার।’ তিনি পোশাকশিল্পে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেন। এছাড়া আইটি, হাইটেক টেকনোলজি, সেবা, উৎপাদন ইত্যাদি খাতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের কথা বলেন।
আইআইসিসিআই চেয়ারম্যান অতুল কুমার সাক্সেনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে বন্দর অবকাঠামো, যোগাযোগ ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে কাজ করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। দুই দেশের যৌথ পরিকল্পনায় দক্ষিণ এশিয়ায় শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হবে।’ বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের জন্য ভারতীয় হাইকমিশনের দ্বার সব সময়ই খোলা থাকবে জানিয়ে ‘জয় বাংলা ও জয় বন্ধু’ বলে তার বক্তব্য শেষ করেন দোরাইস্বামী।
এরপর বক্তব্যে রূপায়ণ গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মাহির আলী খাঁন রাতুল দুই দেশের দীর্ঘ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের ভূমিকার কথাও স্মরণ করেন তিনি। এ সময় চলমান করোনা মহামারীর টিকায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার জন্যও ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদারে ভারতীয় হাইকমিশনারের আহ্বানের প্রতি সমর্থন জানান এই তরুণ ও মেধাবী ব্যবসায়ী।
আইআইসিসিআইর সহ-সভাপতি ও ইম্পেরিয়াল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শামীম রেজা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য ভারতীয় হাইকমিশনারের বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ‘দোরাইস্বামীর সময় বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে। তিনি বাংলাদেশ থেকে কিছু নিতে আসেননি, দিতে এসেছেন।’
অনুষ্ঠানে আইআইসিসিআই চেয়ারম্যান অতুল কুমার সাক্সেনা বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী ভারত। দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্পর্কের নতুন মাত্রা যুক্ত হবে কাজের মাধ্যমে।’
আইআইসিসিআইর পরিচালক টি কে পান্ডে এই আয়োজনের জন্য আয়োজক প্রতিষ্ঠান ও রূপায়ণ সিটিকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রুপের প্রতিনিধি ও রূপায়ণ গ্রুপের কর্মকর্তারা।
-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক