মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে অভিষেকের পর জো বাইডেন ফোন করেছিলেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে। দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কে দুই রাষ্ট্রনেতার ফোনে কথোপকথন খুবই স্বাভাবিক ঘটনা।
কিন্তু বাইডেন জানালেন, বৃহস্পতিবার রাতে জিনপিংয়ের সঙ্গে ফোনে এক টানা দু’ঘন্টা কথা বলেছেন তিনি। এমনিতে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই রাষ্ট্রনেতার মুখোমুখি আলোচনাও এতক্ষণ গড়ায় না। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ওয়াশিংটনের আচরণ বরাবরই দাদা সুলভ। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টই টানা দু’ঘন্টা আলোচনা করেন না। সেও কূটনীতিরই এক কৌশল বলে অনেকে মনে করেন।
জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর এদিন বাইডেন পরিষ্কার বলেন, “বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কে স্তিতাবস্থা ভাল লক্ষণ নয়। এগোতে হবে। নইলে একদিন আমাদের খাবারেই ভাগ বসাবে ওরা”।
প্রশ্ন হল, খাবার বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন বাইডেন?
নিউ ইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনা কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা সদর্থক হয়েছে বলেই জানিয়েছেন বাইডেন। মার্কিন রাষ্ট্রপতি বোঝাতে চেয়েছেন, বিশ্ব প্রভাব বিস্তারের দৌড়ে ওয়াশিংটন-বেজিং যে বৈরীতা শুরু হয়েছে তা ভাল লক্ষণ নয়। আমেরিকা পিছিয়ে পড়ছে।
এর পরই খাবারে ভাগ বসানোর কথা বলেন বাইডেন। তাঁর কথায়, “রেল ক্ষেত্রে চিন বেশ বড় বড় সব উদ্যোগ নিচ্ছে। তাদের ইতিমধ্যেই এমন রেল রয়েছে যা ঘন্টায় ২২৫ মাইল বেগে দৌড়োতে পারে।” অর্থাৎ পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ব্যবসায় বেজিং যে বিশ্ব অর্থনীতিতে এগিয়ে যাচ্ছে সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন বাইডেন। তাতে ধাক্কা খেতে পারে মার্কিন সংস্থাগুলির ব্যবসা।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বিস্তারের জন্য চিন ইতিমধ্যে বেল অ্যান্ড রোড প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যা দক্ষিণ এশিয়ার বহু রাষ্ট্রকে সড়ক পথে জুড়বে। তাতে সুগম হবে চিনা বাণিজ্য।
এ হেন পরিস্থিতি বেজিং সম্পর্কে ট্রাম্প প্রশাসন খুবই কট্টর অবস্থান নিয়েছিল। চিনা পণ্যে উপর অতিরিক্ত শুল্কও চাপানো হয়।
জানা গিয়েছে, গত রাতের আলোচনায় মানবাধিকার, বাণিজ্য, আঞ্চলিক দাদাগিরি নিয়ে জিনপিং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাইডেন। আবার জিনপিংও জানিয়েছেন, আমেরিকা যে বাণিজ্য নীতি নিয়ে চলছে তা পারস্পরিক সুসম্পর্কের পথে অন্তরায়। তা ছাড়া চিনের সার্বভৌম বিষয়ে কারও নাক গলানো বেজিংয়ের নাপসন্দ।
-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক