Home পরিবেশ সুন্দরবনে বাঘ শুমারি শুরু হচ্ছে সেপ্টেম্বরে

সুন্দরবনে বাঘ শুমারি শুরু হচ্ছে সেপ্টেম্বরে

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

খুলনা:  সেপ্টেম্বরে শুরু হচ্ছে সুন্দরবনে বাঘ, হরিণ ও বন্য শুকর গণনার কার্যক্রম। প্রকল্পের মেয়াদ তিন বছরের। নামকরণ করা হয়েছে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প। তৃতীয়বারের মত ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে গণনার জন্য ২শ বিশেষ ক্যাটাগরির ক্যামেরা, ব্যাটারী এসডি কার্ড সংগ্রহ হয়েছে।

ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে এ গণনা চলবে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত। ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। বনের স্থল ভাগের ৪ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার এই জরিপের ফল জানা যাবে ২০২৫ সাল নাগাদ।

সর্বশেষ বাঘ গণনা হয় ২০১৮ সালে। তখনকার ফলাফলে ১১৪টি বাঘের হদিস পাওয়া যায়।

সুন্দরবনে বাঘ গণনার জন্য লোকালয় সংলগ্ন ৬০ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের ফেন্সিং বা বেস্টনী তৈরীসহ বাঘ সংরক্ষণ ও গবেষণা সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম এমাসেই শেষ হবে। ।

সুন্দরবনে কেওড়া, বাইন, সুন্দরী, পশুর কাঠ ও গোলপাতা উজাড় হওয়ায় পাশাপাশি চোরা শিকারীদের হাতে নিহত হওয়ার পর বাঘের সংখ্যা আশংকাজনকভাবে কমে যায়। বাঘ সংরক্ষণের জন্য স্থলভাগের চার হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এই প্রথমবারের মত হরিণ ও শুকর গণনার আওতায় আসবে। ২০০১ সাল থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ৪৬ বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয় ৮ বাঘের। ২০০৯ সালের সিডরে একটি বাঘের মৃত্যু হয়। বাকিগুলো গণপিটুনি ও শিকারীদের হাতে নিহত হয়। এবারের বাঘ শুমারী প্রকল্পের জন্য ৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

সুন্দরবন করমজল বণ্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানিয়েছেন, বন প্রহরীদের তথ্য অনুযায়ী বনের বিভিন্ন অংশে বাঘের তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। বনকর্মচারীরা বিভিন্ন সময় বাঘের পায়ের চিহ্ন দেখতে পায়। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ডিএফও মোঃ বেলায়েত হোসেন জানান, বন বিভাগ বাঘ রক্ষায় কাজ শুরু করেছে। বাঘ ইচ্ছামত বিচরণ করতে পারছে। প্রজনন স্বাভাবিক হচ্ছে। তাতে মনে হচ্ছে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। তিনি বলেন, বাঘ সংরক্ষণে সুন্দরবনে টহল জোরদার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের জরিপে বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৬টি। ২০০৭ সালের সিডর, ২০০৯ সালে আয়লা ও ২০২১ সালে ইয়াসের জলোচ্ছাসে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যায়। বন্য প্রাণিরা জীবন বাঁচাতে লোকালয়ে আশ্রয় নেয়। প্রাকৃতিক দূর্যোগের কবল থেকে রক্ষা করার জন্য বন বিভাগ ১২টি মাটির কেল্লা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।

বন কর্মকর্তারা বলেন, বাঘ ও হরিণ শিকার বন্ধ, প্রজনন সুবিধা সুন্দরবনে বাঘ স্থানান্তর অন্ততঃ দুটি বাঘের স্যাটেলাইট কলার স্থাপন, মনিটরিং ও বাঘের পরজীবি সংক্রমণ নির্ণয় করা হবে। একই সাথে ৬০ কিলোমিটার এলাকার বাঘ ও মানুষের দ্বন্দ নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হবে।