যে কোনও বয়সেই বিশেষত মাঝ বয়সী মহিলাদের হাঁটুতে ব্যথা বর্তমানে অতি পরিচিত একটি সমস্যা। যদিও এখন মহিলা-পুরুষ যে কোনও বয়সেই অস্টিও আরথ্রাইটিসের শিকার হচ্ছেন। হাঁটু প্রতিস্থাপন ছাড়াও বেশ কিছু কনজারভেটিভ চিকিৎসার দ্বারা বহুদিন সুস্থ থাকা সম্ভব।
অস্টিও আরথ্রাইটিস
মূলত বেশি বয়সেই এই রোগ হয়ে থাকে। যদিও এখন বিভিন্ন কারণে বহু কমবয়সিদের মধ্যেও এর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ইনফ্লামেশন বা প্রদাহের কারণে জয়েন্টের মধ্যেকার কার্টিলেজ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে হাড়ের সঙ্গে হাড়ের ঘষা লেগে ব্যথা হয়।
উপসর্গ
১. মূলত বড় জয়েন্টগুলিতে (হাঁটু, কোমর) অসহ্য যন্ত্রণা হয়।
২. হাড় বেঁকে যায়।
৩. জয়েন্ট স্টিকনেস বা অঙ্গ সঞ্চালন করতে না পারা।
৪. জয়েন্ট সোয়েলিং বা টেন্ডারেনস
৫. রাতে যন্ত্রণা বেশি হয়।
৬. হাঁটাচলা করতে কষ্ট হবে।
৭. দৈনন্দিন কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া।
৮. খুব বাড়াবাড়ি হলে বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে যায়।
কোন জয়েন্টে এর প্রবণতা বেশি
মানবদেহের বড় জয়েন্টগুলির মধ্যে অন্যতম হাঁটুর জয়েন্ট। এখানেই অস্টিও আরথ্রাইটিস বেশি হয়। এছাড়া কোমর, গোড়ালি এবং হাতের কবজির জয়েন্টে এর প্রবণতা দেখা যায়।
রিস্ক ফ্যাক্টর
১. বয়স
২. ওবেসিটি
৩. নিয়মিত শরীরচর্চা না করা
৪. বিলাসবহুল জীবনযাত্রা
৫. মদ্যপান ও ধূমপানে আসক্তি
৬. দীর্ঘদিন বাবু হয়ে কিংবা উবু হয়ে বসার অভ্যাস।
৭. চোট বা আঘাত লাগা স্থানে বেশি চাপ তৈরি করলে আরথ্রাইটিসের সম্ভাবনা বাড়ে।
৮. ডায়াবেটিস কিংবা হরমোন ডিসঅর্ডার থাকলে।
শনাক্তকরণ
এই ধরনের ব্যথার উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো এক্সরে, সিটি স্ক্যান এবং প্রয়োজনে এমআরই করে রোগ নির্ণয় করা হয়।
চিকিৎসা
১.প্রাথমিক পর্যায় চিকিৎসক কিছু প্রয়োজনীয় এক্সরসাইজ এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেশন মেডিসিন দিয়ে চিকিৎসা করেন।
২. খুব বেশি বেড়ে গেলে সাপ্লিমেন্টেশন ইনজেকশন কিংবা স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়ার প্রয়োজন হয়।
৩. ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, পি-ক্যাপ, ব্রেস, বেল্ট প্রভৃতি দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।
৪. এর পরেও না কমলে আর্থ্রোকোপিক সার্জারি করে ভঙ্গুর হাড় পরিষ্কার করা হয়।
৫. সকল প্রকার চিকিৎসার ফল আশানুরূপ না হলে শেষ চিকিৎসা জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি।
তবে যে কোনও কিছু করার আগে ডাক্তারের পরার্মশ নেওয়া দরকার।