Home চট্টগ্রাম দূতাবাসে হামলার দায় ভারত সরকার এড়াতে পারে না

দূতাবাসে হামলার দায় ভারত সরকার এড়াতে পারে না

চট্টগ্রামে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ

চট্টগ্রাম: ভারতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলা-ভাংচুর ও জাতীয় পতাকায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এবং  সাম্প্রদায়িক উসকানীর ফাঁদে পা না দিয়ে উভয় দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় জনগণকে আহবান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।

আজ বিকেল ৪ টায় নগরীর সিনেমা প্যালেস চত্বরে আয়োজিত জোটের বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি কমরেড অশোক সাহা। বাসদ, চট্টগ্রাম জেলা সদস্য আকরাম হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে  বক্তব্য রাখেন বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সদস্য আহমদ জসিম, সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছফা ভুঁইয়া,  বাসদ( মার্ক্সবাদী) চট্টগ্রাম জেলা সদস্য আসমা আক্তারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, যে কোন দেশে বিদেশি দূতাবাসের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব সে দেশের রাষ্ট্র ও সরকারের। অথচ ভারত সরকার বাংলাদেশ দূতাবাসের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। উপরন্তু ভারত সরকারের আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি, শাসক দল বিজেপি ও পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উসকানীমূলক বক্তব্য এ ধরনের অনভিপ্রেত কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করছে। যা কুটনৈতিক শিষ্ঠাচার বর্জিত। এ সমস্ত ঘটনায় দুই দেশের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে পুষ্টি যোগালেও ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপদে ফেলছে দুই দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নিরীহ জনগণকে।
জনগণের মধ্যে কোন ভুল প্রবণতা তৈরি হলে তা নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব রাষ্ট্র এবং সরকারের। কিন্তু সরকার এবং ক্ষমতাসীন দলের যে কোন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী বক্তব্য এবং ভূমিকা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভক্তি এবং বিরোধকে বাড়িয়ে তোলে
গত কয়েকদিনে ভারত সরকারের বক্তব্য এবং ভারতে বাংলাদেশ হাই কমিশনে আক্রমণ, বাংলাদেশের পতাকা অবমাননা বাংলাদেশের জনগণকে ক্ষুব্ধ করেছে। ভারত সরকার এর দায় এড়াতে পারে না। অতীতেও সাম্প্রদায়িকতার বিষময় প্রভাব ভারত-বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের জনগণ উপলব্ধি করেছে। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা উপমহাদেশকে অশান্তির আগুনে পোড়াবে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সন্দেহ অবিশ্বাস ও তিক্ততা দুই দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নিপীড়িত জনগণের জীবনকেই বিপন্ন করবে।
সমাবেশে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তারা আরো  বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও যে পরিকল্পিত অসন্তোষ ও অরাজকতা তৈরি করা হচ্ছে তার বিষময় প্রভাব সমাজের দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ধ্বংস করবে। যে কোন ধরনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধে সরকারের জরুরি উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। দেশের প্রধান সমস্যা শোষণ ও বৈষম্য। এর প্রভাবে শ্রমিক-কৃষক, ছাত্র-নারী সকলের জীবন বিপর্যস্ত। ফ্যাসিবাদী শাসন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলাদেশ যখন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের সংগ্রাম করছে তখন সাম্প্রদায়িক সংঘাত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করবে, ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে বিপন্ন করবে এবং দেশের জনগণের ঐক্য ও সংহতিকে বিনষ্ট করবে।
দেশের অভ্যন্তরে কিছু উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ধর্মীয় বিভাজনমূলক বক্তব্য, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা এবং ব্যক্তিগত আক্রমণের ঘটনা নিন্দনীয়। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এসব ঘটনা নিয়ন্ত্রণে জরুরিভাবে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন। “
এছাড়াও সমাবেশে সীমান্ত হত্যা বন্ধ, তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, এবং ভারতের সাথে অসম সকল চুক্তির বাতিলের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি