সত্যি এএক মহা আশ্চর্যের ঘটনা। বলা হয় একটানা কোনও বাল্ব জ্বালিয়ে রাখতে নেই। বাল্ব টানা জালিয়ে রাখলে কেটে যায় অর্থাৎ নষ্ট হয়ে যায়। তবে এই প্রতিবেদনে আপনাদের এক অত্যাশ্চর্য বাল্বের কথা বলব। এক দুই বছর নয়, টানা ১২৩ বছর ধরে জ্বলছে এক বাল্ব। টমাস আলভা এডিশন বৈদ্যুতিক বাল্ব আবিষ্কার করেন। এডিসনের অনেক আগে থেকেই বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা সন্ধান শুরু করেছিলেন বৈদ্যুতিক বাতির। এই সব কাজের ভিত্তিতেই এডিশন আলোর বাল্বের একটি পরিবর্তিত রূপ তৈরি করেন। চালু করেন বাল্ব। পেটেন্টও করেন। ফলে আজ বাজারে হরেক রকমের বাল্ব পাওয়া যায়।
ক্যালিফোর্নিয়ার লিভারমোর শহরের ফায়ার স্টেশনে একটি বাল্ব লাগানো রয়েছে যেটি জ্বালানো হয়েছিল ১৯০১ সালে। আজও সেই বাল্বটি দিব্যি জ্বলছে। শেলবি ইলেকট্রিক কোম্পানি এই বাল্ব তৈরি করেছিল। ১৯৩৭ সালে পরিবর্তনের জন্য এই বাল্বটি প্রথমবারের মতো বন্ধ করা হয়েছিল। পরিবর্তনের পর ফের বাল্বটি জ্বলে ওঠে। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও এই বাল্বের নাম নথিভুক্ত রয়েছে। বাল্ব পর্যবেক্ষণের জন্য পরে বসানো সিসি ক্যামেরাও। ১০০ বছরের বেশি পুরনো এই বাল্বটি ২৪ ঘন্টা জ্বললে খরচ হয় চার ওয়াট বিদ্যুৎ। ২০০১ সালে, শতবর্ষী বাল্বের ১০০ তম জন্মদিন সাড়ম্বরে পালন করা হয়েছিল। সেবার একটি মিউজিক পার্টিরও আয়োজন করা হয়। ফায়ার স্টেশনে এই আশ্চর্যজনক বাল্বটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসেন। মাঝে মধ্যে ফায়ার স্টেশনে এতটাই ভিড় হয়ে যায় যে মনে হয় ফায়ার স্টেশনটা যেন আস্ত একটা মিউজিয়াম।
একবার ২০১৩ সালে এই বাল্বটি স্বয়ংক্রিয় ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। সকলেই তখন ভেবেছিলেন বাল্বটি সম্ভবত ফিউজ হয়ে গিয়েছে তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তারে ত্রুটি ধরা পড়ে। তারটি পাল্টানোর পর আবার জ্বলে ওঠে বাল্বটি। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত শতাব্দী প্রাচীন এই ঐতিহাসিক বাল্ব আলোকিত করে রেখেছে চারপাশ। এই বাল্বটি বেশ কয়েকবার পরীক্ষা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে অন্যান্য বাল্বের থেকে তেমন কোনও পার্থক্য খুঁজে পাননি। অন্য সব বাল্বের মতোই একই জিনিস দিয়ে এই বাল্বটি তৈরি করা। তারপরও কেন এবং কীভাবে এতদিন যাবত এটি টিকে আছে, সে প্রশ্ন সবার মনেই। সবার কাছেই বিস্ময় সৃষ্টি করেছে শতবর্ষী এই বাল্বটি।
-সূত্র: এই সময়