Home First Lead বিএনপি নির্বাচনে গেলে অনেক সমস্যা দূর হবে

বিএনপি নির্বাচনে গেলে অনেক সমস্যা দূর হবে

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

বিএনপি অংশ নিলে নির্বাচন নিয়ে অনেক সমস্যা দূর হবে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মুহম্মদ ফারুক খান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি জানান, সম্প্রতি সংসদীয় কমিটির একটি প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে ৩ কংগ্রেস সদস্যসহ দেশটির বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন।

মুহম্মদ ফারুক খান জানান, এ সফরের আগে ও পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানও যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান।

সফরে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫০ বছরের সম্পর্ক, র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশের শ্রমিক ইস্যু ও আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেছেন।

বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই ৩ সফর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সফরে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) প্রধানের সঙ্গে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে ফারুক খান বলেন, তার সঙ্গে আমাদের নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে। আমরা বলেছি যে পৃথিবীর অন্যসব গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হবে। তবে পৃথিবীর সবখানেই নির্বাচনে যে হেরে যায়, সে বলে যে নির্বাচনে সমস্যা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রেও এটা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও মানেননি।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি বাংলাদেশে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় যখন সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচন নিয়ে তখনই প্রশ্ন ওঠে যখন বিএনপি বা সমমনা দলগুলো আসে না। না এসে যদি বলে নির্বাচনকে প্রতিহত করব তখনই গোলমাল হয়। আমরা আশা প্রকাশ করেছি আগামী নির্বাচনে বিএনপি আসবে। নির্বাচন নিয়ে তাদের যদি কোনো অবজারভেশন থাকে বা নির্বাচন ব্যবস্থাকে উন্নত করা নিয়ে তাদের কোনো পরামর্শ থাকলে নির্বাচন কমিশনের কাছে যেতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি বিএনপি নির্বাচনে এলে আমাদের নির্বাচন নিয়ে অনেক সমস্যা দূর হতে পারে। নির্বাচন সংবিধান মোতাবেক হবে। আমাদের সংবিধানের ভেতরে আলোচনার অনেক সুযোগ আছে। বিএনপি বলে তারা নির্বাচনে যাবে না, প্রতিহত করবে। এমন অবস্থায় তো আলোচনার কিছু থাকে না।

৩ জন সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের যথেষ্ট আশাবাদী মনে হয়েছে। আমাদের সম্পর্ক ভালো চলছে। আগামীতে আরো ভালো চলবে।’

এই ৩ জনের বাইরেও সাউথ ও সেন্ট্রাল এশিয়া বিষয়ক উপমন্ত্রী ড্যানিয়েল লুসহ আরো বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘আমাদের নির্বাচন, র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, লেবার সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনার ফলাফল হয়তো পরে দেখা যাবে। তবে আমাদের মনে হয়েছে তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন।’

র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যেসব আলোচনা হয়েছে তার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি তোমরা র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছ। কিন্তু র‌্যাব তো তোমাদের পরামর্শে সৃষ্টি হয়েছে। ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত যখন জঙ্গি, বোমা হামলার ঘটনা হয়েছে তখনই তোমাদের পরামর্শে এই স্পেশাল ফোর্স করা হয়েছে। তোমরা র‌্যাবকে প্রশিক্ষণ দিয়েছ। অস্ত্রশস্ত্র সেখান থেকে কেনা হয়েছে। তোমাদের গাইডলাইন অনুযায়ী তারা অপারেশন করেছে এবং তারা যথেষ্ট সফলতা অর্জন করেছে। ২০০৪-০৫ সালে বাংলাদেশ প্রায় ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে চলছিল। আইএস, জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদ, আজ সেটা অনেক কমে গেছে। এর অনেকটা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। এর পেছনে র‌্যাবের অবদান আছে।’

তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি আমরা এটাও বলেছি র‌্যাবের কখনো কখনো এক্সেসও হয়েছে। আর এক্সেস যখন হয়েছে তার পানিশমেন্টও হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডও দেয়া হয়েছে। এক্সেস করলে কাউকে আমরা ছেড়ে দিইনি। র‌্যাবকে অকার্যকর করলে কিন্তু দেশের কোনো লাভ হবে না। বরং এতে আমাদের দেশে পুনরায় জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ বাড়তে পারে। তারা বলেছে বিষয়টি তারা পর্যবেক্ষণ করছে।’

সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের দেশি-বিদেশি থিঙ্কট্যাঙ্কারদের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে ঢাকা-ওয়াশিংটন কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের সুপারিশ করা হয় বৈঠকে।

কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, মো. আব্দুল মজিদ খান, মো. হাবিবে মিল্লাত, নাহিম রাজ্জাক, নাবিল আহমেদ এবং নিজাম উদ্দিন জলিল (জন) বৈঠকে অংশ নেন।