বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: আগামী ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন ( বিএসএএ ) এর নির্বাচন। সংগঠনের বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফের নেতৃত্বাধীন ‘সম্মিলিত পরিষদ’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। শিপিং সার্কেলে আর একটি গ্রুপের নেতা শাহেদ সরওয়ার। এবারের নির্বাচনে তাঁর কোন প্যানেল নেই। তবে, সম্মিলিত পরিষদ প্যানেলের বাইরে ১৩ জন প্রার্থী রয়েছেন।
আপাতদৃষ্টিতে এককভাবে নির্বাচন করছেন শাহেদ সরওয়ার। তারপরও প্রতিপক্ষ তাঁকে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে হুমকি মনে করছে। ভোটের ভেন্যু পরিবর্তনের যে কারণই বলা হোক না কেন প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন বানচালের আশঙ্কা থেকে সেটা করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন শিপিং সংশ্লিষ্টরা। প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের ছত্রছায়ায় নির্বাচনী কৌশল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সম্মিলিত পরিষদের বাইরের প্রার্থীরা এক ফোরামে না হলেও যোগাযোগ আছে পরষ্পরের। প্যানেলভুক্ত কয়েকজনের সাথেও তাদের যোগাযোগ রয়েছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, সরাসরি নির্বাচনের পরিবর্তে সিলেকশনে শাহেদ সরওয়ারসহ সমমনাদের নিয়ে বিএসএএ বোর্ড গঠনের চেষ্টা হয়েছে কয়েক দফায় । সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফসহ আরও কয়েকজনকে বাদ দিয়ে দুপক্ষের গ্রহণযোগ্যদের নিয়ে বোর্ড গঠনের অনুরোধ করা হয়। এক্ষেত্রে যুক্তি দেখানো হয় যে সম্মিলিত পরিষদের প্যানেলে কয়েকজন বিতর্কিত এবং বারে বারে বোর্ডে থাকা ব্যক্তিকে রাখা হয়েছে, যেটা সংগঠনের জন্য উদ্বেগ তৈরি করেছে। ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার কূটকৌশল হিসেবে সম্মিলিত পরিষদ বিএসএএকে ফ্যাসিবাদের লেজুড়বৃত্তি সংগঠনে পরিণত করেছে। কেবল তা নয়, শিপিং এজেন্টদের স্বার্থের বিপরীতে থাকা সংগঠনের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের বিভিন্ন ফোরামে প্রতিনিধিত্ব করতে পাঠানো হয়। ফলে সেখানে শিপিং এজেন্টদের স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়েছে।
শিপিং সংশ্লিষ্টরা জানান, বিগত দুটি নির্বাচনে জয়ী সম্মিলিত পরিষদের একচ্ছত্র আধিপত্য শিপিং সার্কেলে। বড় হাউজগুলো তাদের সাথে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে এমজিএইচ গ্রুপ, কন্টিনেন্টাল, কর্ণফুলি, বিএস কার্গো, এইচআরসি, গ্যালাক্সি, কিউসি, এভারেট, রয়্যাল। এমজিএইচ গ্রুপে রয়েছে ৬ ভোট, বিএস কার্গোর ৫ ভোট, রয়্যালে ৩ ভোট, গ্যালাক্সিতে ৩ ভোট ( জেনারেল ক্যাটেগরিতে ২ এবং এসোসিয়েট ক্যাটেগরিতে ১) উল্লেখযোগ্য। বিএসএএ ভোটে জয় পরাজয় নির্ধারণে প্রধান নিয়ামক এসব বড় হাউজ।
২০২১ সালের ৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত নির্বাচনটি ছিল বিএসএএর ইতিহাসে সবচেয়ে জমজমাট ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন। সেই নির্বাচনে ২৪ পরিচালক পদের মধ্যে সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদ অর্ডিনারি ক্যাটেগরিতে ১৬টির মধ্যে ১৪ টিতে এবং এসোসিয়েট ক্যাটেগরিতে ৮ পরিচালক পদের সব ক’টিতে বিজয়ী হয়। অপরদিকে, শাহেদ সরওয়ার গ্রুপ থেকে বিজয়ী হন তিনি নিজে এবং মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জহির। তবে, আগের মেয়াদের নির্বাচনে গ্রুপটি জিতেছিল। তখন এমজিএইচ গ্রুপের ভোটাররা ছিলেন এই গ্রুপে। পরবর্তীতে সৈয়দ ইকবাল আলীর নেতৃত্বে এই গ্রুপের ভোটাররা সম্মিলিত পরিষদে যোগ দেন।
কয়েক মেয়াদ আগেও শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের নেতাদের নির্বাচন করা হতো সমঝোতার ভিত্তিতে সিলেকশনে। অবশ্য, এভাবে এমন সব শিপিং ব্যক্তিত্বদের নেয়া হতো যাদের প্রত্যেকে ট্রেডের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম। এসোসিয়েশনের সব সভায় উপস্থিত থেকে তাদের প্রায় সবাই সদস্যদের সেই প্রত্যাশা কম-বেশি পূরণ করতে পেরেছেন সে সময়ে।