এক সিমেন্ট শিল্পপতির মধ্যস্থতায় সংকট নিরসন
বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ ৬ মাস বৃদ্ধির অনুমোদন চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পত্র
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন ( বিএসএএ ) নির্বাচন নিয়ে যা আশঙ্কা করা হযেছিল সেটাই সত্য হলো। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে । এর মধ্য দিয়ে নিরসন হলো গত কয়েকদিন ধরে বিরাজমান অস্বস্তিকর পরিস্থিতির। ইলেকশন বোর্ড সংগঠনের বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ ৬ মাস বৃদ্ধির অনুমোদন চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পত্র দিয়েছে মঙ্গলবার।
বিএসএএ নির্বাচন হওয়ার কথা ১৩ এপ্রিল। ভোটের যাবতীয় আয়োজনের শেষ পর্যায়ে এসে একটি গোষ্ঠি অবস্থান নেয় ক্ষমতাসীনদের বিপক্ষে। প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় তারা ভোট বন্ধের দাবি জানান। দাবি করেন যে ভোটের যাবতীয় কার্যক্রম গোপনে করা হযেছে। ফলে তারা ভোটার হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ইলেকশন বোর্ডকে তারা এটা জানান এবং নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে তাদেরকে ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানান। পরিস্থিতি নির্বাচনকে অনিশ্চিত করে তোলে। যথাসময়ে নির্বাচনের পক্ষে এবং বিপক্ষের অনড় অবস্থানে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা তৈরি হয়। এর প্রেক্ষিতে ভোটের ভেন্যু হোটেল আগ্রাবাদ থেকে সরিয়ে র্যাডিসন ব্লুতে স্থানান্তরের ঘোষণা দেয়া হয়।
রবিবার আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন অফিসের সন্নিকটে শোডাউন করা হয় মহানগর বিএনপির সদস্য ও এএ শিপিং সার্ভিসের স্বত্ত্বাধিকারী মশিউল আলম স্বপনের নেতৃত্বে ‘বৈষম্যের শিকার ব্যবসায়ী ফোরাম’-এর ব্যানারে। সেখান থেকে নানা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
এমন পরিস্থিতিতে দেশের এক সিমেন্ট শিল্পপতি ( শিপিং ব্যবসায়ী ) উদ্যোগ নেন উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতার। দুগ্রুপের সাথে প্রাথমিক যোগাযোগের পর নেপথ্যে থেকে দায়িত্বটি অর্পণ করেন সিকম শিপিং লিমিটেড-এর পরিচালক আলহাজ জহুর আহমদের ওপর। সোমবার এবং মঙ্গলবার দুদিন তিনি দফায় দফায় কথা বলেন বিবাদমান দু’গ্রুপের সাথে। সেই সঙ্গে নির্বাচন বোর্ড ও আপিল বোর্ডের সাথে। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর অফিসে দীর্ঘ বৈঠক হয় আপিল বোর্ড ও নির্বাচন বোর্ডের সাথে। নির্বাচন স্থগিত করার ব্যাপারে তাঁর প্রস্তাবে সম্মত হয় সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো।
সিকম সেন্টার থেকে ফিরে নির্বাচন বোর্ড সভায় বসে বিস্তারিত আলোচনার পর ভোট স্থগিত করে এবং বিএসএএ-র বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে ৬ মাস বৃদ্ধির অনুমোদন চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্য সংগঠনের মহাপরিচালক বরাবরে পত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাতে কয়েকজন প্রার্থী এবং বৈষম্যের শিকার ব্যবসায়ী ফোরামের উত্থাপিত আপত্তিসমূহ সমাধান এবং ভোটের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য এই সময় চাওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর যোগাযোগ করা হলে বিএসএএ-র এক পরিচালক বললেন, নির্বাচন বোর্ড যেটা ভাল মনে করেছে সেটা করেছে, তা নিয়ে আমাদের কোন আপত্তি নেই। আমাদের এই অরাজনৈতিক ব্যবসায়ী সংগঠনটিতে কোন রকমের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ অতীতে কখনও হয়নি। তবে, এবারে যে বা যারা সেটা করেছে এবং রাজনীতি ঢোকানোর চেষ্টা করেছে তারা সেটা মোটেও ভাল করেননি।
‘বৈষম্যের শিকার ব্যবসায়ী ফোরাম’-এর আহ্বায়ক মশিউল আলম স্বপন বলেছেন ইলেকশন বোর্ড সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভোট স্থগিত করে। আশা করি আমাদের উত্থাপিত আপত্তিগুলো বিধান মোতাবেক নিরসন হবে এবং স্বৈরাচারের দখলমুক্ত হবে ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনটি।