Home জাতীয় কবি আবু বকর সিদ্দিক আর নেই

কবি আবু বকর সিদ্দিক আর নেই

কবি আবু বকর সিদ্দিক। ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আবু বকর সিদ্দিক আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।

মৃত্যুর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন কবির মেয়ে রাজনীতিবিদ বিদিশা সিদ্দিক। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আবু বকর সিদ্দিককে খুলনা সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার রাতে তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে) স্থানান্তর করা হয়।  কবি আবু বকর সিদ্দিক দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

আজ বাদ যোহর খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে কবির জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। মৃত্যুকালে কবি পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গিয়েছেন।

আবু বকর সিদ্দিক একাধারে ছিলেন কবি, কথাসাহিত্যিক, ছড়াকার, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও সমালোচক। তিনি ১৯৩৪ সালে ১৯ আগস্ট  বাগেরহাট জেলার গোটাপাড়া গ্রামে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতৃনিবাস একই জেলার বৈটপুর গ্রামে। পিতা মতিয়র রহমান পাটোয়ারী ছিলেন একজন সরকারি চাকরিজীবী।

আবুবকর সিদ্দিক একজন কবি, কথাসাহিত্যিক, ছড়াকার, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও সমালোচক। সাহিত্যে অবদানের জন্য আবুবকর সিদ্দিক ভূষিত হয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮), বাংলাদেশ কথাশিল্পী সংসদ পুরস্কার, বঙ্গভাষা সংস্কৃতি প্রচার সমিতি পুরস্কার (কলকাতা)-সহ অনেক পুরস্কারে। তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে ২০টির অধিক কাব্যগ্রন্থ, চারটি উপন্যাস, ১৫টি গল্পগ্রন্থ ও একটি ছড়াগ্রন্থ।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগ থেকে ১৯৫৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন। তিনি পর্যায়ক্রমে চাখার ফজলুল হক কলেজ, দৌলতপুর বিএল কলেজ, কুষ্টিয়া কলেজ, বাগেরহাট পিসি কলেজ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। ১৯৯৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর কুইন্স ইউনিভার্সিটি ও ঢাকার নটর ডেম কলেজে অধ্যাপনা করেন।

তিনি কবিতা লিখতে বেশি পছন্দ করতেন। তার প্রকাশিত ধবল দুধের স্বরগ্রাম (১৯৬৯), বিনিদ্র কালের ভেলা (১৯৭৬), হে লোকসভ্যতা (১৯৮৪), মানুষ তোমার বিক্ষত দিনসহ (১৯৮৬) ১৮টি কাব্যগ্রন্থ আছে। আছে হট্টমালা (২০০১) নামে একটি ছড়াগ্রন্থও।

আবুবকর সিদ্দিকের গল্পগ্রন্থের মধ্যে ভূমিহীনের দেশ (১৯৮৫), চরবিনাশকাল, মরে বাঁচার স্বাধীনতা, কুয়ো থেকে বেরিয়ে, ছায়াপ্রধান অঘ্রান, কান্নাদাসী, বামাবর্ত, মুক্তিলাল অভ্যুদয়, কালোকুম্ভীর, হংসভাসীর তীওে (২০০৮) উল্লেখযোগ্য। লেখকের উপন্যাসসমূহ হলো : জলরাক্ষস (১৯৮৫), খরাদাহ, একাত্তরের হৃদয়ভস্ম, বারুদপোড়া প্রহর (১৯৯৬)। প্রেমেন্দ্র মিত্র, বুদ্ধদেব বসু, বিষ্ণু দে থেকে শুরু করে শক্তি চট্টোপাধ্যায়, উৎপলকুমার বসু পর্যন্ত অনেক কবির ব্যক্তিগত সান্নিধ্যে এসেছেন তিনি।