বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: বিদেশি কোনো পরামর্শে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। দলটির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ কথা জানিয়ে বলেন, নির্বাচন হবে বাংলাদেশে। বিএনপি নির্বাচনে যাবে কি যাবে না তার পরামর্শ দিবে জনগণ। অন্য কেউ না। জনগণ যেদিন নিজের হাতে ভোট দিতে পারবে, মেশিনের মাধ্যমে নয়। সেদিন জনগণ বলবে আপনারা নির্বাচনে যান। জনগণের দল হিসেবে বিএনপি নির্বাচনে যাবে, বিদেশি কোনো পরামর্শে নয়।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে অবস্থিত বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে সিলেট জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির নেতাদের নিয়ে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
গত ৪ঠা এপ্রিল রাতে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি এ সহায়তা চান। বৈঠকে বাংলাদেশের অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র ও নির্বাচনের তাগিদ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একটি মধ্যপন্থি গণতান্ত্রিক দল। আজ বাংলাদেশ যে সংকট তা হচ্ছে দেশে গণতন্ত্র নাই, মানুষের অধিকার নাই, ভোটের অধিকার নাই, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মামলা, হামলা এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। স্বৈরাচারী সরকার, গায়ের জোরের সরকার এসব সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। দেশ আজ ধ্বংসের কিনারায় গিয়ে পৌঁছাছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকাতে গিয়ে ধরনা দিচ্ছেন। ধরনার ইংরেজিতে হচ্ছে লবিং। কয়েকটি দিন আগেও আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছে, বিএনপি নাকি ধরনা দেয়। আজ বাংলাদেশের মানুষের কাছে প্রমাণিত যে ধরনা কারা দিচ্ছে। এই সরকার সব দিকে যখন মনে করছে তাদের ব্যর্থতা, সকল ক্ষেত্রে তাদের পরাজয় তখন তারা বিদেশিদের সহযোগিতা চাচ্ছে। এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, আমরা সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। এটা তো বেশি কিছু কথা নয়। এই সরকার পর পর তিনটি জাতীয় নির্বাচন এবং স্থানীয় নির্বাচনে যে কারচুপি, যে ডাকাতি করেছে তাতে জনগণ ভোটের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। আমাদেরও আস্থা নাই। এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে সুষ্ঠু, নিরেপক্ষ গ্রহণযোগ নির্বাচন হবে না। এটা আমরা ঘোষণা করেছি। এখন সরকারের উচিত পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচন দেয়া। তাহলে দেশের সকল দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। নির্বাচনের প্রতি মানুষের আস্থা আসবে। বিএনপিও জনগণের দল হিসাবে সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ আজ মানবাধিকার নাই। সে জন্য র্যাবসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এটা দেশের জন্য সম্মানের নয়। বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। সেই ব্যাপারেও এখানে সমাধান না করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকা গিয়ে তাঁবেদারি করছে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মোক্তাদির আহমেদ, তাহসিনা রুশদীর লুনা, সিলেট জেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম, সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শামিম আহমদ ও সিলেট জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দরা।