বিজনেসটুডে২৪
ডিশ, ইন্টারনেটের ও ঝুলন্ত তারের কারণে দেশঝুড়ে বিরাট নিরাপত্তা ঝুঁকিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। চট্টগ্রামে অবস্থা বেশি খারাপ। তা সত্ত্বেও এখানে ঝুলন্ত তার অপসারণ করার কোন উদ্যোগ এখনও নেয়া হয়নি।
ডিশ ও ইন্টারনেটের ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত বেপরোয়া। তারা অবৈধভাবে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা আয় করছে । লাইন টানতে গিয়ে বিদ্যুতের তার কেটে যায়। ট্রান্সফরমারে আগুন ধরে।
বিদ্যুত জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সম্প্রতি বলেছেন যে বিদ্যুতের খুঁটিতে অবৈধ ঝুলন্ত তারের কারণে ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিতরণ করা যাচ্ছে না। বিদ্যুতের তার কাটা যাচ্ছে। ট্রান্সফরমারগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা যাচ্ছে না। এতে বছরে ১৬ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়। পিডিবি’র একজন প্রকৌশলী জানালেন, বৈদ্যুতিক খাম্বাগুলোতে ডিশ এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের তার ব্যবহার করায় তাতে আমাদের কারিগরি ডিজাইন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বৃদ্ধি পেয়েছে অগ্নিকা-ের আশংকাও । তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। সামান্য ত্রুটিতে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ডিশ অপারেটর এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা অবৈধভাবে তার টানে বিদ্যুতের খাম্বায়। তারের জটলায় পথচারীদের হাঁটাও দায়। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ( পিডিবি )’র এক খাম্বা থেকে আরেক খাম্বায় অসংখ্য তার টানা। কোথাও কোথাও বৈদ্যুতিক তারের সাথে পেঁচিয়ে রয়েছে এসব তার। বিভিন্ন এলাকায় কু-লী পাকানো তার। কোন কোন স্থানে ঝুলতে ঝুলতে তারগুলো মাটি স্পর্শ করেছে। পথচারীদের মাথার সঙ্গে লেগে থাকে। অনেকে ভয়ে ফুটপাতে হাঁটেন না।বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ( পিডিবি ) কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তার ঝুলানো হয় তাদের খাম্বায়। চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন সড়কে তাকালেই দেখা যায় চারদিক ভরে গেছে ইন্টারনেট ও ডিশ লাইনের তারে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড তাদের খাম্বাগুলোকে জঞ্জাল ও ঝুঁকিমুক্ত করার ব্যাপারে নির্বিকার। কখনও তারা এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়নি। অপরদিকে, ফুটপাত ও রাস্তাকে পথচারীদের চলাচলের জন্য অবাধ ও নিরাপদ রাখতে কোন ব্যবস্থা নেয় না সিটি কর্পোরেশন। ফকিরহাট, গোসাইলডাঙ্গা, নিমতলাসহ চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে ফুটপাত, রাস্তা, অলিগলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল, ডিশ এন্টেনা ও অন্যান্য তারের জঞ্জাল। তাতে জনদুর্ভোগ এবং চলাচলে ঝুঁকি সত্ত্বেও সরানোর কোন উদ্যোগ নেই। এসব তারের জটলা দৃষ্টিকটু এবং নগরীর সৌন্দর্য নষ্ট করছে।
ফকিরহাটের এক দোকানদার জানালেন, ডিশ এন্টেনা ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের কর্মীরা কাজ করে ফুটপাত ও রাস্তার যেখানে সেখানে তারের কু-লী ফেলে রেখে চলে যান। আরেকবার যখন প্রয়োজন হবে তখন এসে কাজ করার অপেক্ষায় তারা সেটা করেন। সেই তার ছড়িয়ে যায় সবখানে। তাতে জড়িয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন পথচারীরা। এসবের কোন তোয়াক্কাই করেন না তারা। ইন্টারনেট বা বিভিন্ন ডিস লাইনের ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টরা রাজনৈতিক দলের স্থানীয় লোক। তারা কোন কিছুর পরোয়া করেন না। কেউ প্রতিবাদ করলে ‘খবর’ আছে বলে জানালেন তিনি । পায়ের সঙ্গে তার জড়িয়ে গিয়ে দু’বার আহত হওয়ার কথা জানালেন তিনি। শুধু যে রাস্তায় তারের জঞ্জালের দুর্ভোগ তা নয়, আরও ঝুঁকির কথা জানালেন স্থানীয়রা। জানান, খাম্বায় বৈদ্যুতিক তারের একই সঙ্গে ডিশ এবং ইন্টারনেটের তারে তারে ধাক্কা খেয়ে আগুনের ফুলকি বের হয়। আগুন ধরে যায় তারে। তখন পথচারীরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সংযোগ। এমন পরিস্থিতি প্রায় সময়ে হয়ে থাকে।