Home First Lead বিমা কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতাশূন্য

বিমা কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতাশূন্য

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে মঙ্গলবার দিনের শুরু থেকে শেয়ারবাজারে বিমা কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে।

রবিবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ( আইডিআরএ ) সাধারণ ও জীবন বিমা কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সংরক্ষণের বিধান পরিপালনের যে নির্দেশনা দিয়েছে তার প্রেক্ষিতে শেয়ারের দর বৃদ্ধির সম্ভাবনায় বিক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে। প্রায় সব বিমা কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধির দৈনিক সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে।

বিমা আইন অনুযায়ী, দেশে নিবন্ধিত সাধারণ ও জীবন বিমা কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সংরক্ষণ করতে হয়। তবে অধিকাংশ বীমা কোম্পানি তা পরিপালন করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে বীমা কোম্পানিগুলোকে আগামী এক মাসের মধ্যে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণ এবং পরিশোধিত মূলধনের ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণসংক্রান্ত আইন পরিপালনের নির্দেশনা জারি করেছে বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

গত রবিবার আইডিআরএ এমন নির্দেশনা জারি করে কোম্পানিগুলোকে পাঠিয়েছে। তবে, সেই সংবাদ সোমবার তেমন জানাজানি হয়নি। সোমবার বিকেল থেকে আইডিআরএ-র সার্কুলারটি বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে মঙ্গলবার দিনের শুরু থেকে বিনিয়োগকারীরা বিমা খাতের শেয়ারের প্রতি ঝুঁকে পড়েন।

আইডিআরএ’র পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত আলোচ্য নির্দেশনায় বিমা আইন, ২০১০ এর ২১ (৩) ধারা পরিপালনপূর্বক আগামী এক মাসের মধ্যে তফসিল-১ অনুযায়ী ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইডিআরএকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।

বিমা আইন, ২০১০ এর ২১ (৩) ধারায় বলা হয়, জীবন বিমা কোম্পানির ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। যার ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তাগণ কর্তৃক সংরক্ষণ করতে হবে। অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আর সাধারণ বিমা কোম্পানির ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৪০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। যার ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তাগণ কর্তৃক প্রদত্ত হবে। অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

বর্তমানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ৪৯টি ইন্স্যুরেন্সের মধ্যে সাধারণ বিমা কোম্পানি ৩৭টি ও জীবন বিমা কোম্পানি ১২টি। এর মধ্যে সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকার নিচে রয়েছে চারটির। কোম্পানিগুলো হলো অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, ইসলামিক ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স ও প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিগুলো মধ্যে প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ২৯ কোটি ৭০ লাখ ২৬ হাজার টাকা, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের ৩০ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের ৩৩ কোটি ৮৮ লাখ ৭৫ হাজার এবং ইসলামিক ইন্স্যুরেন্সের ৩৭ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

অন্যদিকে জীবন বিমাকোম্পানিগুলোর মধ্যে পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার নিচে রয়েছে দুটির। কোম্পানি দুটির মধ্যে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের রয়েছে ১৬ কোটি ৬৪ লাখ ৩২ হাজার এবং রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২৯ কোটি ৪২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।

এদিকে তালিকাভুক্ত ৪৯টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র পাঁচটি ইন্স্যুরেন্সের উদ্যোক্তা শেয়ার রয়েছে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি। কোম্পানিগুলো হলো এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স ও পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স।

অন্যদিকে উদ্যোক্তা শেয়ার ৬০ শতাংশের নিচে রয়েছে ৪৪ ইন্স্যুরেন্সের। এর মধ্যে উদ্যোক্তা শেয়ার সবচেয়ে কম রয়েছে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, বিজিআইসি, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গ্রীনডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স, নিটল ইন্স্যুরেন্স, নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের। কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্ত শেয়ার রয়েছে ৩৫ শতাংশেরও কম।