বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা ছিল না বললেই চলে। তবুও টানা হারের পর ক্লান্ত সমর্থকরা আশায় বুক বাঁধছিলেন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় পাওয়ার। ডাচদের বিপক্ষে জয় না পাওয়ার কোন কারণও ছিল না বাংলাদেশের। সব দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও টাইগার সমর্থকদের সব আশা ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে নেদারল্যান্ডস।
নেদারল্যান্ডসের দেয়া ২৩০ রানের লক্ষ্য তাড়া তো করতেই পারেনি, উল্টো অলআউট ১৪২ রানে। হেরেছে ৮৭ রানের বড় ব্যবধানে। অথচ কোলকাতার ইডেন গার্ডেনে ছিল উৎসবের আমেজ। প্রত্যাশা ছিল জয় পাবে বাংলাদেশ। সেই প্রত্যাশা পূরণ তো দুরের কথা, ছিল হতাশার গল্প।
দীর্ঘদিন ধরে লালন করা বিশ্বকাপে ভালোর আশা শেষ। কার্যত বিদায় ঘন্টা বেঁজে গেছে লাল সবুজের দেশটির।
রান তাড়ায় নামা বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়ে দুচিন্তার ভাঁজ ছিল আগে থেকেই, ইডেনের উইকেট নিয়ে শঙ্কা। এসবই সত্যি হয়েছে। পঞ্চম ওভারে প্রথম ব্যাটার হিসেবে আউট হন লিটন দাস। আরিয়ান দত্তকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ১২ বলে তিন রান করেন।
এরপর তানজিদ হাসানও আউট হন ১৬ বলে ১৫ রান করে। তিনে পাঠানো মেহেদী হাসান মিরাজ একপাশ ধরেই রেখেছিলেন। কিন্তু আরেকদিকে উইকেট যাচ্ছিল নিয়মিতভাবেই। দু’টি চারে ১৮ বলে নয় রান করার পর পল ফন মেকেরিনের অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে যেয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন। এরপর বাংলাদেশের ব্যাটাররা যাওয়া-আসার মিছিলে নামেন। সাত রানের ভেতর বাংলাদেশ হারায় তিন উইকেট। ৭০ রানে নেই ছয় উইকেট।
শুরুটা হয় সাকিব আল হাসানকে দিয়ে। ১৪ বলে ¯্রফে পাঁচ রান করে ফন মেকেরিনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। গত কয়েকদিনে দেশে ফিরে অনুশীলনের পরও আশা দেখানোর মতো কিছু করতে পারেননি।
৪০ বলে ৩৫ রান করে মিরাজ আউট হন বাস ডে লেডের বলে, তিনিও উইকেটের পেছনেই ক্যাচ দেন। বাংলাদেশের সর্বনাশ নিশ্চিত হয় মুশফিকুর রহিম ফন মেকেরিনের বলে বোল্ড হলে। এরপর ফর্মে থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শেষ চেষ্টা করছিলেন মাহেদী হাসানকে নিয়ে। দু’জন মিলে ২৮ রানের জুটিও গড়েন।
এর আগে টস জিতে শুরুতে নেদারল্যান্ডস ভালো করতে পারেনি একদমই। বাংলাদেশও দ্রুত পায় সাফল্য। নয় বলে তিন রান করে বিক্রমজিৎ সিং ক্যাচ দেন তাসকিন আহমেদের বলে সাকিব আল হাসানের হাতে। পরের ওভারেই আরেক ওপেনার ম্যাক্স ও ডাউডকে ফেরান শরিফুল ইসলাম।
৩ বলে কোনো রান করার আগেই তার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে শরীর দূরে রেখে ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ দেন স্লিপে দাঁড়ানো তানজিদ হাসানের হাতে। শুরুর ওই ধাক্কা কিছুটা হলেও সামলে নেন ওয়েসলি বারেসি ও কলিন আকারম্যান। কিন্তু খুব লম্বা সময় চালিয়ে নিতে পারেননি তারা।
এ দু’জনের ৫৯ রানের জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। আটটি চারের ইনিংসে ৪১ বলে ৪১ রান করা এই ব্যাটার ক্যাচ দেন সাকিব আল হাসানের হাতে। পরের ওভারে এসেই ৩৩ বলে ১৫ রান করা কলিন আকারম্যানকে আউট করেন সাকিব, এবার ক্যাচ নেন মোস্তাফিজ।
দু’জনের বিদায়ের পর ডাচদের হাল ধরেন স্কট এডওয়ার্ডস। তার দু’টি ক্যাচ ছাড়েন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ ক্যাচ ছাড়ে পরেও। এই ফাঁকে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন এডওয়ার্ডস। ছয়টি চারে ৮৯ বলে ৬৮ রান করা এই ব্যাটার আউটও হন ক্যাচ দিয়েই।
সাইব্রান্ডন্ড এঙ্গেলব্রেখটকে ৬১ বলে ৩৫ রান করার পর এলবিডাবলু করেন মাহেদী হাসান।
নেদারল্য্যান্ডসের রান দুইশ ছাড়ানো রানের স্বপ্নটাও স্থিমিত হয়ে আসে। কিন্তু লোগান ফন বিক আলো ছড়ান তাতে। তার দু’টি চার ও একটি ছক্কায় ১৬ বলে ২৩ রানের ইনিংস নেদারল্যান্ডসের রানকে নিয়ে যায় দুইশ ছাড়িয়েও বেশ খানিকটা দূরে।