জোড়া গোলে ব্রাজিলের নায়ক রিচার্লিসন
দোহা: শেষ বিশ্বকাপ জয় ২০০২’এ। তারপর যথাক্রমে ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি এবং বেলজিয়ামের কাছে হেরে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে হলুদ জার্সিধারীদের। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে ব্রাজিল। আর জি-গ্রুপের প্রথম প্রতিপক্ষ সার্বিয়া ২১ নম্বরে। তা সত্ত্বেও বিশ্বকাপ অভিযান শুরুর আগে যথেষ্ট সতর্ক ছিল ব্রাজিল।
মঙ্গলবার আর্জেন্তিনা এবং বুধবার জার্মানি হারার পর আত্মতুষ্টি থেকে ফুটবলারদের দূরে থাকার পরামর্শ দেন কোচ তিতে। সার্বিয়া এবার পর্তুগালকে হারিয়ে প্লে অফ খেলতে বাধ্য করেছিল রোনাল্ডোদের। ব্রাজিল অন্যদের থেকে আলাদা। জোগো বোনিতো অর্থাৎ সুন্দর ফুটবলই সাম্বার পাসওয়ার্ড।
লুসেইল স্টেডিয়ামে তিতে-ব্রিগেডকে থামানোর জন্য ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ রণনীতি নিয়েছেন ড্রাগান স্তোইকোভিচ। পাঁচ মিডিওয় দল সাজিয়ে এক পয়েন্টই তাঁর লক্ষ্য। আর তিতের পরিকল্পনা, নেইমার-ভিনিসিয়াস-রিচার্লিসনের ত্রিভুজে বিপক্ষ রক্ষণ ভেঙে গোল ছিনিয়ে আনা। ৪-১-২-৩ ফর্মেশন দল নামিয়েছিলেন ব্রাজিল কোচ। ৩-৪-৩ দল নামেই ছিল সার্বিয়া।
ফিফা তালিকায় ব্রাজিল এক নম্বর সার্বিয়া ২১ নম্বর। আজকের আগে পর্যন্ত ব্রাজিল শেষ সাতটি ম্যাচে ২৬ গোল করেছিল। হজম করেছিল দুটি। ম্যাচের প্রথমার্ধে ব্রাজিলের হয়ে বাঁদিক থেকে ভিনি এবং ডান প্রান্ত থেকে রাফিনহা গতির সঞ্চার করছিলেন। নেইমারকে ডবল কভারিং করে রেখেছিল সার্বিয়া। তাই সেভাবে নজর টানতে পারছিলেন না সাম্বা কিং।
তার মধ্যেও একবার কর্নার থেকে সরাসরি গোলে মেরে দিয়েছিলেন। ক্যাসেমিরও দুটি দেখার মত বল বাড়িয়েছিলেন, যা গোলে পরিণত হয়নি। প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য। দেখার ছিল প্রথমার্ধের লড়াই দ্বিতীয়ার্ধে কতটা ধরে রাখতে পারে সার্বিয়া। দ্বিতীয়ারদের শুরুতেই রাফিনহা গোল পেয়ে যাচ্ছিলেন। সার্বিয়ার গোলরক্ষকের দক্ষতায় গোল হয়নি।
সান্দ্রোর শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ব্রাজিলের অপেক্ষা অবশ্য দীর্ঘায়িত হয়নি। ৬২ মিনিটে নেইমারের পা থেকে তৈরি হয় আক্রমণ। ভিনিসিয়াসের শট গোলরক্ষক আটকে দিলে রিটার্ন বল জালে পাঠিয়ে দেন রিচারলিসন। কাতার বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সাফল্য যেমনটা নির্ভর করছে নেইমারের ওপর, তেমনই নাম্বার নাইন রিচার্লিসন কেমন পারফর্ম করতে পারেন, তার ওপরেও নির্ভর করছে ব্রাজিলের ভবিষ্যৎ।
৭৪ মিনিটে দ্বিতীয় গোল ব্রাজিলের। সেই ভিনির পাস, রিচার্লিসন রিসিভ করেই সাইড ভলিতে জাল কাঁপিয়ে দিলেন। ১০ মিনিটের একটা ছোট্ট ঝড়, তাতেই শেষ সার্বিয়ার প্রতিরোধ। এটাই হয়তো ব্রাজিলের সাম্বা ম্যাজিক। ভাগ্য ভাল লজ্জার মুখে পড়তে হয়নি সার্বিয়াকে। সব সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ব্রাজিল পাঁচ গোল দিতে পারত।