বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: বিশ্বে জাহাজ ভাঙ্গার শীর্ষ অবস্থানে বরাবরের মত বাংলাদেশ। ২০২১ সালে বিশ্বে জাহাজ ভাঙ্গা হয়েছে ৭৬৩ টি। এগুলোর মধ্যে ২৫৪ টি ভেঙ্গে বাংলাদেশ শীর্ষস্থানে।
করোনার ধাক্কায় ২০২০ সালে স্ক্র্যাপের জন্য পুরনো জাহাজ আমদানি বেশ কমে গিয়েছিল। ১৪৪ টি জাহাজ আমদানি হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতি সামলে আমদানি বেড়েছে ২০২১ সালে। আর তা থেকে স্ক্র্যাপ পাওয়া গেছে ৮০ লাখ ৩৬ হাজার টন। আগের বছরে পাওয়া গিয়েছিল ৬৯ লাখ টন। জাহাজ ভাঙার দিক থেকে বাংলাদেশ ২০১৭ ও ২০১৮ সালেও শীর্ষে ছিল।
রি রোলিং মিলগুলোর রড তৈরির কাঁচামালের প্রায় ৩০ শতাংশ এখনো জাহাজ ভাঙা কারখানাগুলো জোগান দেয়।বাকিটা উদ্যোক্তারা সরাসরি পুরনো লোহার টুকরা হিসেবে আমদানি করে পূরণ করে থাকেন।
স্ক্র্যাপ জাহাজের আমদানি বৃদ্ধি প্রসঙ্গে চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। আর তাতে বৃদ্ধি পেয়েছে ইস্পাত পণ্যের চাহিদা। আর চাহিদা পূরণে বেড়েছে স্ক্র্যাপ জাহাজের আমদানিও। তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে চলতি ২০২২ সালে চাহিদা আরও বাড়বে। তাতে বৃদ্ধি পাবে পুরনো জাহাজ আমদানিও।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে পুরনো জাহাজ আমদানি হয়েছে ২১০ টি। স্ক্র্যাপ হয়েছে ৩১ লাখ ৪৪ হাজার টন। ২০২০ সালে ভারত ২০৩ টি পুরনো জাহাজ আমদানি করেছিল।
২০২১ সালে পাকিস্তান ১১৯টি, তুরস্ক ৭৭টি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৩৭টি এবং অন্যান্য দেশ ৬৬ টি জাহাজ আমদানি করে।
বড় আকারের যেসব জাহাজ গত বছরে বিক্রি হয়েছে তার প্রায় সবগুলো হয়েছে বাংলাদেশে। শুরুর দিকে বিশ্বে জাহাজ ভাঙ্গার বড় বাজার ছিল তাইওয়ান। পরবর্তীতে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারত ছিল সর্বাধিক স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানির তালিকায়। পরিবেশ দূষণ হ্রাসে চীনে স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি বন্ধ করে দেয়া হয়। এখন বাংলাদেশ জাহাজ ভাঙার বৃহত্তম বাজার।
চট্টগ্রামের কুমিরা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত প্রায় ৫৫টি স্ক্র্যাপ জাহাজ ইয়ার্ড। পুরনো জাহাজ এনে এসব ইয়ার্ডে ভাঙ্গা হয়।
এদিকে, পুরনো জাহাজ আমদানি বাড়লেও লৌহজাত পণ্য রডের দাম কমেনি। এফবিসিসিআইর অভিযোগ কারখানা মালিকরা সিন্ডিকেট করে দাম বৃদ্ধি করেছেন। দেশের নির্মাণ খাত এবং স্থানীয় নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ রক্ষার্থে এফবিসিসিআই রড আমদানির অনুমতি চেয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।