Home First Lead তেলের বাজারে বড় অস্থিরতা নেই, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে বিপিসি

তেলের বাজারে বড় অস্থিরতা নেই, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে বিপিসি

ছবি সংগৃহীত

বিশেষ প্রতিনিধি

বিজনেসটুডে২৪:

মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানী জেনারেল কাসেম সোলেমানি নিহত হওয়ার সংবাদে অপরিশোধিত তেলের দর ৪ শতাংশ বাড়লেও কার্যত বড় কোন অস্থিরতা বাজারে নেই। তবে, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন ( বিপিসি ) পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

কাসেম সোলেমানি নিহত হওয়ার সংবাদ জানাজানি হলে শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দর ৪ শতাংশ বেড়ে ৬৯.৫০ ডলারে দাঁড়ায়। আর স্টক মার্কেটে ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম ও শেল কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধি পায় দেড় শতাংশ। আপাতত এতটুকু। এর বেশি কিছু হয়নি বিশ্বের তেল বাজারে।

তার কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা জানান, একসময়ে ট্রেডিং এক্সচেঞ্জে তেলের বাজার ওঠানামা করতো দালালদের তাৎক্ষণিক ধারণার ওপর। বর্তমানে তা হয় না। সেই চরিত্র পরিবর্তিত হয়ে গেছে। তেল উৎপাদন, পরিশোধন এবং কেনাবেচার ধরন পরিবর্তিত হয়ে গেছে। তাই আগের মত দালালদের অনুমান নির্ভর নয় বাজার।

বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের প্রায় সবটাই আমদানি করতে হয় স্পট মার্কেট থেকে। এর প্রায় অর্ধেক আমদানি হয় টেন্ডারে। শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্য নয়, বিকল্প উৎস রয়েছে বাংলাদেশের কাছে। ইরাক যুদ্ধের সময়ও বাংলাদেশকে জ্বালানি তেলের জন্য বড় সংকটে পড়তে হয়নি। মধ্যপ্রাচ্যের বিকল্প উৎস থেকে তখন তেল আমদানি হয়েছিল।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন ( বিপিসি ) চেয়ারম্যান শামসুর রহমান জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি ও তেলের বাজার গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের বিকল্প উৎস থেকেও জ্বালানি আমদানির অনেক সুযোগ বিদ্যমান।

 মধ্য প্রাচ্যের বাইরে আরও দেশ তেল উত্তোলন করে। ওপেকের প্রভাব বর্তমানে একারণে তেলের বাজারের ওপর নেই।

গত সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলা হয়েছি। সেদিন ব্যারেল প্রতি দর ১০ ডলার বেড়ে গিয়েছিল কেবল। এক সপ্তাহের মধ্যে দর কমে দাঁড়ায় ৬০ ডলারে। সে সময়েও আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে হুমকি পাল্টা হুমকি ছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতে মার্কিন তেল কোম্পানিগুলোর পাইপলাইনে বা পশ্চিমা বিনিয়োগে নতুন যেসব ক্ষেত্র থেকে তেল উৎপাদনের চেষ্টা হচ্ছে  সেগুলোতে হামলা হলে সাময়িকভাবে অপরিশোধিত তেলের দাম হয়তো বাড়বে। কিন্তু মধ্য বা দীর্ঘ মেয়াদে সেটি বিশাল কোন সংকট তৈরি করবে, সে সম্ভাবনা কম।

তেল উৎপাদেন নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সমঝোতা রয়েছে ওপেক দেশসমূহ এবং রাশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশের। তাই মধ্যপ্রাচ্যে আর একটি যুদ্ধ লাগলে তেলের বাজারে প্রতিক্রিয়া ঠিক কি হবে-ধারণা করা কিছুটা কঠিন । সিটিব্যাংকের বিশ্লেষকরা মনে করছেন, স্বল্প মেয়াদে দাম কিছুটা উঁচুর দিকে থাকতে পারে। যেসব দেশের জ্বালানি তেল সংগ্রহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহের ওপর নির্ভর সেগুলো এখন উদ্বিগ্ন বর্তমান পরিস্থিতিতে।

উল্লেখ্য, আমেরিকা একসময়ে জ্বালানি তেলের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহের ওপর নির্ভর হলেও তা নেই। যুক্তরাষ্ট্র এ খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রয়োজনের তেল নিজেরাই  উত্তোলন করে।