Home Second Lead বিষাক্ত জাহাজটির প্রবেশ নিষিদ্ধ বাংলাদেশের সমুদ্রসীমানায়

বিষাক্ত জাহাজটির প্রবেশ নিষিদ্ধ বাংলাদেশের সমুদ্রসীমানায়

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: সরকারের কঠোর অবস্থানে ব্যর্থ হলো সেই জাহাজটি বাংলাদেশে বিক্রির চেষ্টা। কেবল তা নয় বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম শামসুল শামসুল আরেফিন জানান,  ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড অফলোডিং ( এফএসও ) ট্যাংকার জে. ন্যাট যাতে কোন শিপব্রেকার না কিনেন সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ শিপ ব্রেকারস এন্ড রিসাইকেলার্স এসোসিয়েশনকে তা জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আর বাংলাদেশের জলসীমায় যাতে সেটা প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে অবহিত করা হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর এবং বিস্ফোরক অধিদপ্তরকেও জানানো হয়েছে বিষাক্ত বর্জ্যবাহী জাহাজটি সম্পর্কে।

এনজিও শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্ম বুধবার বাংলাদেশকে জে. ন্যাট ট্যাংকারটির ব্যাপারে অবহিত করে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানায় । সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক)ও জাহাজটি নিষিদ্ধ করার জন্য আহ্বান জানায় সরকারের প্রতি। এসব প্রেক্ষাপটে শিল্প মন্ত্রণালয় জাহাজটি বাংলাদেশে বিক্রি বন্ধ করলো। শিল্প মন্ত্রণালয়ের জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়া শাখা থেকে ইস্যু করা এক স্মারকে তা শিপ ব্রেকারস এন্ড রিসাইকেলার্স এসোসিয়েশনকে জানানো হয়। এতে ‍উল্লেখ করা হয় বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদের কথা।

উল্লেখ্য, বিজনেসটুডে২৪ ৩০ এপ্রিল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

এনজিও শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্ম বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে  জানায়, ১৫০০ মেট্রিক টনের অধিক বিষাক্ত নানা বর্জে্য ভর্তি ট্যাংকারটি। রয়েছে এক হাজার টন স্লোপ অয়েল, ৫০০ টন তৈলাক্ত পানি, মার্কারি মিশ্রিত ৬০ জন স্লাজ অয়েল। অবকাঠামোতেও রয়েছে প্রচুর মার্কারি। এসব পদার্থের সব ক’টাই মারাত্মক ক্ষতিকর জনস্বাস্থ্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য। জানানো হয়, আন্তর্জাতিক বর্জ্য আইনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এ ধরনের বর্জ্য থাকা জাহাজ আমদানিতে।

জে. ন্যাট-এর নাম ছিল জেসলিন ন্যাটুনা। ইন্দোনেশিয়ার গ্লোবাল নায়াগা বার্সামা পিটি ছিল ১৯৮২ সালে জাপানে নির্মিত ট্যাংকারটির স্বত্ত্বাধিকারি। সাগরের মাঝে ন্যাটুনা গ্যাসফিল্ডে নিয়োজিত ছিল। সেখানে ড্রিলিং করা গ্যাস ভরে রাখা হতো। গত আগস্টে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে হংকং-এর কোম্পানি সোম্যাপের কাছে। সোম্যাপ এর নগদ কারবার স্ক্র্যাপ  জাহাজ বেচার। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, চিন এবং তুরস্কের শিপ ব্রেকার ও ব্রোকারদের কাছে বিক্রি করে। ট্যাংকারটি বিক্রির সুবিধার জন্য নাম এবং ফ্ল্যাগ পরিবর্তন করে সোম্যাপ। নতুন নাম জে. ন্যাট। ফ্ল্যাগও পাল্টানো হয়। বর্তমানে ট্যাংকারটি পালাও ফ্ল্যাগে চলে।

জে. ন্যাটকে যখন বাংলাদেশে রপ্তানির চেষ্টার খবর জানাজানি হয় তখন তা নিয়ে সক্রিয় হয় ইন্দোনেশিয়ার পরিবেশগত কেয়ার কমিটি। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়কে তারা সেটা নিয়ে অভিযোগ জানায় ১৫ এপ্রিল। এর পরপরই ১৭ এপ্রিল বাটাম-এর হারবার মাস্টারকে অনুরোধ জানায় যাত্রা বন্ধ রাখার। জে. ন্যাটে থাকা উচ্চ তেজষ্ক্রিয় পদার্থ এবং ট্যাংক ক্লিন না করার ব্যাপারে অবহিত করা হয়। বাটাম থেকে ১৮ এপ্রিল এটাকে  নিয়ে চট্টগ্রামের দিকে রওনা হয় একটি টাগ। উদ্দেশ্য এখানে কোন শিপব্রেকারের কাছে বিক্রি। ৭  মে নাগাদ পৌঁছবে বলে অনুমান করা হয়েছিল। তার আগেই নিষিদ্ধ করা হলো বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় প্রবেশ।

সাগরের মাঝে গ্যাসফিল্ডে জেসিলিন ন্যাটুনা।