কুড়িগ্রাম থেকে নয়ন দাস: হরিজন সম্প্রদায়ের বিয়েতে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে মদ খেয়ে নাচানাচিতে ধাক্কা লাগার জেরে। এতে নিহত হয়েছে বরের ভাই।
সোমবার সকালে সদরের পুরাতন রেল স্টেশন এলাকায় হরিজন সম্প্রদায়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে ঘটনাটি। পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়,
মদ খেয়ে নাচানাচির সময় ধাক্কা লাগার জেরে মারামারির ঘটনা ঘটে। আর সেই মারামারিতে রাহুল বাস্ফর (১৮) নামের এক কিশোর নিহত হয়েছেন। নিহত কিশোর বরের খালাতো ভাই।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার। নিহত কিশোর রাহুল বাস্ফর গাইবান্ধা সদর উপজেলার কাচারি বাজার এলাকার প্রদীপ বাস্ফরের ছেলে।
বরপক্ষের লোকজন জানান, রবিবার রাতে গাইবান্ধার কাচারী বাজার এলাকার স্বপন বাস্ফরের ছেলে রনি বাস্ফরের সঙ্গে কুড়িগ্রাম সদরের পুরাতন রেল স্টেশন পাড়ার সুমন বাস্ফরের মেয়ে বাস্ফরের বিয়ে হয়। বর পক্ষে প্রায় শতাধিক লোক আসেন। সোমবার সকালে কনে বিদায়ের আগে মদ খেয়ে নাচানাচির সময় কনের প্রতিবেশী এক যুবকের সঙ্গে রাহুলসহ কনে পক্ষের কয়েকজনের ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় উভয় পক্ষের লোকজনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। কিছু পরে স্থানীয় হরিজন সম্প্রদায়ের এক যুবক আকস্মিকভাবে ছুটে এসে রাহুলের বুকে ছুরিকাঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এ সময় বর পক্ষের আরও কয়েকজন আহত হন বলে জানান তাঁরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
রুবন বাস্ফর নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঘটনার সময় তিনি একটু দূরে ছিলেন। সকালের নাচানাচির সময় সংঘর্ষের সূত্র ধরে স্থানীয় এক যুবক বাড়ি থেকে ছুরি নিয়ে এসে রাহুলের বুকে আঘাত করে। এতে সঙ্গে সঙ্গে লুটে পরে রাহুল। সেখানে রাহুলের সঙ্গে থাকা কয়েকজন রাহুলকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাঁরাও আহত হন। হামলাকারী ওই যুবক ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান। তবে হামলাকারীকে তিনি চিনতে পারেননি বলে জানান।
এ বিষয়ে কনের বাবা সুমন বাস্ফর বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বাড়িতেই ছিলাম। ওই দিকে কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমার জানা নাই। আমি দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করছি।’
ওসি খান মো. শাহরিয়ার জানান, হামলাকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তবে তদন্তের স্বার্থে হামলাকারীর নাম প্রকাশে অপারগতা জানান ওসি।