বাদলকে ঢাকা থেকে আর দেলোয়ারকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেছে একদল যুবক ও কিশোর। ছেলের বয়সী ওইসব কিশোর-যুবকের পায়ে ধরেও রেহাই পাননি ৩৭ বছর বয়সী ওই নারী।
ভয়ে ৩২ দিন আগের ঘটনাটি কাউকে জানাতেও পারেননি নির্যাতিতা কিংবা তার স্বজনরা। ২ সেপ্টেম্বর রাতের ঘটনার একটি ভিডিওচিত্র রবিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হলে তা জানাজানি হয়।
নির্যাতিতার বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস করেননি তারা। ওই যুবকদের ভয়ে ঘটনার পর তার মেয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।
নির্যাতনের শিকার ওই নারীর চাচা গতকাল বিকেলে বলেন, ‘এলাকার কিছু যুবক তার ভাতিজিকে ‘খারাপ’ আখ্যায়িত করে ঘরে ঢুকে নির্যাতন করেছে বলে তিনি শুনেছেন। তবে ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘জায়গাজমি নিয়ে বিরোধের কারণে তাদের ভাইদের মধ্যে তেমন সখ্য নেই। তার ভাইও ওই বাড়িতে থাকেন না। ওই মেয়েই বাপের ঘরে থাকেন। নির্যাতনের ঘটনার পর থেকে বসতঘরে তালা ঝুলিয়ে তারা কোথায় চলে গেছেন কাউকে বলে যাননি।’
একলাশপুর ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘ওই নারীর ১৮ বছর আগে বিয়ে হয়। তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় কয়েক বছর আগে তিনি বাপের বাড়ি চলে আসেন। তার এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। বাড়িতে ওই নারী ছেলে ও এক ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন। সম্প্রতি তার স্বামী তার কাছে আসা-যাওয়া করতে শুরু করেন। এ নিয়ে কয়েক যুবক আপত্তি জানিয়ে সেদিন ওই নারীকে নির্যাতন করে। ঘটনার দিন ওই নারী তার স্বামীর সঙ্গেই ছিলেন। নির্যাতনকারীরা তার স্বামীকেও আটক করে নিয়ে যায়। পরে ওই নারীর ভাই ১ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনেন।’
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী রবিবার বিকেলে জানান, বিকেলে একলাশপুরের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে ওই নারীর বাড়ি গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে নির্যাতনকারী দলের এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তার নাম আবদুর রহিম। তার বাড়ি জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রহিম ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
রবিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরই তারা বিষয়টি জানতে পারেন এবং তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেন। বিকেলে এ ঘটনায় জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে। অনেক খোঁজাখুঁজি করে সন্ধ্যার আগে ওই নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, রাতে এই ঘটনায় জড়িত আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। তার নাম আব্দুর রহমান। বাকিদের গ্রেপ্তারে এবং নির্যাতিতা পরিবারকে আইনি সহযোগিতা দিতে জেলা পুলিশের ৫টি ইউনিট কাজ করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে এসপি বলেন, অপরাধীরা যেকোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকুক না কেন বা যত ক্ষমতাধরই হোক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
-দেশরূপান্তর