বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
রংপুর: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেওয়া সম্মাননা প্রত্যাখ্যান করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই শিক্ষককে একই মঞ্চে সম্মাননা দেওয়ায় তিনি এ সম্মাননা প্রত্যাখ্যান করেন।
শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। বক্তব্য শেষে এক শিক্ষার্থী রাইসুল ফারিদ দাঁড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশ রায় ও কলা অনুষদের ডিন শফিক আশরাফকে সম্মাননা স্মারক দেওয়ার বিরোধিতা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী রাইসুল ফারিদ বলেন, আপনি বলেছেন প্রথমে আমাদের কাঠামো ভাঙ্গতে হবে। অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন যারা স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের রাজনীতি দালালি, দোসরী করেছে সেই কাঠামো এখনও বলবৎ আছে। স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, এখানে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন রয়েছেন যিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি এবং সেই পরিষদের সেক্রেটারি ছিলেন মশিউর। যে কমিটির সেক্রেটারি ছিলেন মশিউরের মতো কলঙ্কিত শিক্ষক (আবু সাঈদের হত্যা মামলার আসামি), আজকে সেই কমিটির সভাপতিকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত কলা অনুষদের ডিন ড. শফিকুর রহমান রয়েছেন যিনি ১৩ আগস্ট একটি কলাম লিখেছেন। যেখানে একটি লাইনে লিখেছিলেন, ‘আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পরও পরিস্থিতি সামলানোর পর্যায়ে ছিল’। আমরা শিক্ষার্থীরা জানতে চাই, আবু সাঈদের প্রাণের বিনিময়েও এখানে কি সামলানোর কথা তিনি বুঝিয়েছেন? এর স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা যখন দেখতে পাই যে, আমাদের সামনে যারা স্বৈরাচারী শাসকের দোসরী করেছে তাদের সম্মাননা স্মারক দেওয়া হচ্ছে। আমরা এটা মানতে পারি না।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাঠামোতে এখনো স্বৈরাচারের দোসররা বসে আছে। তাদের সরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কার না করলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মাঠে আন্দোলন গড়ানোর হুঁশিয়ারি দেন।
পরে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সম্মাননা স্মারকটি প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি কাঠামো থেকে ব্যবস্থা বিলোপ করা হবে। আপনারা যে অভিযোগটি তুলেছেন সে বিষয়ে আমি জানতাম না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য যেন আপনাদের অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন। ফ্যাসিবাদমুক্ত বেরোবিতে এসে যেদিন আপনাদের দাবি পূর্ণ করতে পারব সেদিন সম্মাননা গ্রহণ করব।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকত আলী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খানসহ বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয় প্রশাসনের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।