বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ডি-ডবলু। এই নামেই জাকার্তা এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ পরিচয় দিয়েছে এক ব্যক্তির। তিনি কোভিড পজিটিভ হওয়া সত্ত্বেও বিমানে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন। সেজন্য নিজেই নিজের স্ত্রী সাজেন। মুখ ঢাকেন বোরখায়। তাঁর সঙ্গে ছিল স্ত্রীর পাসপোর্ট। সেই সঙ্গে ছিল স্ত্রীর কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তিনি বিমানে উঠে পোশাক বদলাতে গিয়ে ধরা পড়েন।
রবিবার সিটিলিঙ্কের একটি বিমানে তিনি জাকার্তা থেকে তেরনাত শহরে যেতে চেয়েছিলেন। বিমান ওঠার পরে তাঁকে দেখে এক ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের সন্দেহ হয়। তিনি পুলিশকে জানান, মহিলার পোশাক পরে একজন ওয়াশরুমে ঢুকলেন। কিন্তু বেরিয়ে এলেন পুরুষের পোশাক পরে। তাঁর মুখ এখনও বোরখায় ঢাকা রয়েছে।
তেরনাত শহরে বিমান নামা মাত্র তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। বিমান বন্দরেই পরীক্ষা করে জানা যায়, তিনি কোভিড পজিটিভ। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি সুস্থ হয়ে উঠলেই তাঁকে গ্রেফতার করা হবে।
ইন্দোনেশিয়ায় এখন দৈনিক প্রায় ৫০ হাজার মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। ওই দেশটি এখন এশিয়া মহাদেশে করোনার এপিসেন্টার হয়ে উঠেছে। মাত্র একমাস আগেই দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০ হাজারের আশপাশে। পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা, যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে শীঘ্রই হাসপাতালে বেডের অভাব দেখা দেবে। অভাব হবে অক্সিজেনেরও।
গত মে মাসে ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন তুঙ্গে, তখন একদিনে ৪ লক্ষ মানুষ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছিলেন। ইন্দোনেশিয়ার তুলনায় ভারতের লোকসংখ্যা পাঁচগুণ। ইন্দোনেশিয়ায় দৈনিক গড় মৃত্যুহার এখন ৯০৭। মাত্র একমাস আগেও সেদেশে দৈনিক মৃত্যুহার ছিল ১৮১। ভারতে মৃত্যুহার তুলনায় বেশি। এদেশে গড়ে প্রতিদিন করোনায় মারা যাচ্ছেন ১০৭২ জন।
ইন্দোনেশিয়ায় এখনও পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। ভারতে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ১৪ শতাংশ মানুষ। ব্লুমবার্গের ভ্যাকসিন ট্র্যাকার জানাচ্ছে, সেই তুলনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে এবং আমেরিকায় টিকাকরণের হার অনেক বেশি। ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৪৬ শতাংশ এবং আমেরিকায় ৫২ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়ায় পজিটিভ কোভিড টেস্ট রেট ২৭ শতাংশ। ভারতে ওই রেট মাত্র দুই শতাংশ। ইন্দোনেশিয়ায় পজিটিভিটি রেট বেশি হওয়ার অর্থ, সরকার কেবল অত্যন্ত অসুস্থ ব্যক্তিদেরই টেস্ট করছে। তার মানে অনেক কোভিড রোগীরই সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। জাভা ও পর্যটন কেন্দ্র বালিতে গত নানা বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। কিন্তু তাতেও ওই দুই জায়গায় ভিড় সেভাবে কমেনি।