Home কৃষি বোরোক্ষেতে নেক-ব্লাস্ট ছত্রাক

বোরোক্ষেতে নেক-ব্লাস্ট ছত্রাক

নেক-ব্লাস্ট ছত্রাক আক্রান্ত ক্ষেত

কীটনাশক প্রয়োগ করেও কাজ হচ্ছে না
নয়ন দাস

কুড়িগ্রাম: উলিপুরে বোরো ধানক্ষেতে নেক-ব্লাস্ট ছত্রাক রোগ ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকের বাম্পার ফলনের আশা হতাশায় পরিনত হয়েছে।

কৃষি বিভাগের পরামর্শে কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোন কাজ হচ্ছে না। ব্লাস্ট রোগ আক্রান্ত শত শত বিঘা জমির ধান পড়ে আছে কৃষকরা কাটছে না। সর্বশান্ত কৃষকরা জানায় এক বিঘা জমির ধান কেটে এক মন ধান ও পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে।
কৃষিবিদরা জানান, প্রতিকূল আবহাওয়া ও জমিতে মাত্রাতিরিক্ত ইউরিয়া-ম্যাগনেসিয়াম ব্যবহারের ফলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
কৃষি অফিস জানায়, উপজেলার ১টি পৌরসভা ১৩ টি ইউনিয়নে চলতি বোরো মৌসুমে ২২ হাজার ১’শ ৭৬ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে উফশী ১৪ হাজার ১’শ ৬ হেক্টর, বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড ৭ হাজার ৯’শ ২০ হেক্টর এবং দেশী ১’শ ৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ৪.৪৫ হেক্টর ব্রি-২৮ জাতের ধান ক্ষেতে নেক-ব্লাস্ট ছত্রাকের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। শীষের গোড়া পঁচে ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। বৈরি আবহাওয়া ও বাতাসের মাধ্যমে এ ছত্রাকটি দ্রুত এক ক্ষেত থেকে অন্য ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ছে। ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে স্টেনজা, দিপা ট্রপার, সেলটিমা, ডায়মেনশন, অথবা জিটাভো পানিতে মিশিয়ে জমিতে স্প্রে করা সহ জমিতে পানি ধরে রাখা, ধানের শীষ বের হওয়ার আগে ও পরে ২ বার স্প্রে করা ও ধানের শীষ বের হলে বিকালে স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ক্ষের পর ক্ষেত জুড়ে ব্লাস্ট রোগাক্রান্ত ধান পড়ে রয়েছে কৃষকরা কাটছে না। দুর থেকে দেখে মনে হবে ধান পেকেছে কিন্তু বাস্তবে ধান গুলো ব্লাস্ট রোগে চিটা হয়ে গেছে। ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের মধুপুর বামনের হাট গ্রামের মজিবর বহমান, রায়পাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল জব্বার জানান, রোগাক্রান্ত আড়াই একর জমির ধান কেটে ধান পেয়েছে মাত্র ৩ মন। তার শুধু ধান কাটতে খরচ হয়েছে ২ হাজার টাকা। এ পরিস্থিতিতে কৃষি অফিসের কোন লোক সহায়তা করেনি।
গুনাইগাছ পুর্ব কালুডাঙ্গা গ্রামের জহুর উদ্দিনের ৫ বিঘা জমির ধান চিটা হয়েছে তাই ক্ষেতে পড়ে আছে কাটছেন না। তিনি বললেন ‘এবার বোরো আবাদ করি সর্বশান্ত হইছি। এখন পেটের ভাতও নাই গরুর খাবারও নাই সে চিন্তায় দিশেহারা।’
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় উঠান বৈঠকের মাধ্যমে লিফলেট বিতরণ ও ছত্রাক নাশক অনুমোদিত মাত্রায় ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানান। কিন্তু সরেজমিনে এর কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।