বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ভারতের উত্তরপ্রদেশে কানপুরে সমাজবাদী পার্টি ঘনিষ্ঠ পারফিউম ব্যবসায়ীর বিভিন্ন আস্তানায় তল্লাশি অভিযানে আরও ১৭ কোটি টাকা, ৬৪ কেজি সোনা ৬ কোটি টাকা দামের ৬০০ কেজি চন্দনকাঠের তেলের সন্ধান পেল আমদাবাদের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব জিএসটি ইনটেলিজেন্স। ২২ ডিসেম্বর অভিযান শুরু করে তারা। সুগন্ধী দ্রব্যের পাশাপাশি ওই ব্যবসায়ীর নানা সম্পত্তিতে পান মশলা , তামাকজাত নেশার সামগ্রীও তৈরি হত। এপর্যন্ত হিসাববহির্ভূত নগদ ২৫৭ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। ডিজিজিআই জানিয়েছে, এপর্যন্ত এটাই সর্বোচ্চ পরিমাণ উদ্ধার হওয়া নগদ।
পীযূষ জৈন নামে ব্যবসায়ীকে রবিবার রাতে টানা ৪০ ঘণ্টার ওপর জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছে। জৈনের ফ্যাক্টরি, বাসভবন থেকে মিলেছে নগদ ১০ কোটি টাকা। ১৭৭ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে তাঁর কানপুরের আনন্দনগরের বাড়ি থেকে। ১০৭ কোটি টাকা মিলেছে কনৌজের বাড়ি থেকে। পুরো টাকাই বেআইনি, যার কোনও হিসাব নেই। খবরে প্রকাশ, প্রথমে হাতে থরে থরে সাজানো নগদ টাকা হাতে গোনা শুরু হয়। গুনতে গুনতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন তদন্তকারী দলের লোকজন। তারপর নিয়ে আসা হয় টাকা গোনার মেশিন। মোট ১৯টি গণনা যন্ত্র এসেছে। কনৌজের বাড়িতে ২৫০ কেজি রুপো পাওয়া গিয়েছে। এছাড়া ২৫ কেজি সোনা। সব মিলিয়ে জৈনের কোম্পানির সংখ্যা ৪০। এর মধ্যে দুটি মধ্য প্রাচ্যে। তল্লাসি চলাকালে জৈনের একাধিক বাড়ির ৩০০টি চাবি পাওয়া গিয়েছে। সূত্রের খবর, কয়েকটি বাড়ির দরজা খোলা যায়নি। তাই ডাকা হয়েছে চাবি তৈরি, ঠিক করার লোকজনকে। ৯টি ড্রামে পাওয়া গিয়েছে চন্দনকাঠের তেল। কাবার্ড বক্স খুলতেই বেরিয়ে পড়েছে ২ হাজার টাকার নোটের একাধিক বান্ডিল। উদ্ধার হওয়া সোনার গায়ে বিদেশি ছাপ্পা থাকায় নিয়মমাফিক ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্সকে তদন্তে সামিল করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, জেরায় জৈন স্বীকার করেছেন, তাঁর নানা বাসস্থান থেকে উদ্ধার হওয়া নগদ অর্থ এসেছে জিএসটি ফাঁকি দিয়ে বিক্রি করা পণ্যের মাধ্যমে। ২০০-র বেশি ভুয়ো জিএসটি ইনভয়েস উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, তদন্তের সময় প্রথমে জৈন দাবি করেন, তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নগদ তিনি পেয়েছেন পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া ৪০০ কেজি সোনা বেচে। জৈন বলেন, তিনি গত বেশ কয়েক বছর ধরে ছোট অলঙ্কার শিল্পী, দোকানদারদের অল্প অল্প করে সোনা বিক্রি করেছেন। তবে এই দাবি কতদূর সত্যি, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে আমদাবাদ নিয়ে যাওয়া হতে পারে। এর মধ্যেই খবর, স্থানীয় বাসিন্দারা জৈন ওষুধের ব্যবসাও চালান বলে দাবি করেছেন। স্থানীয় পারফিউম ব্যবসায়ীরা আবার দাবি করছেন, জৈন কখনই সুগন্ধী ব্যবসায় ছিলেন না। তবে তার পারফিউম কোম্পানির সদর দপ্তর নাকি মুম্বইয়ে এবং সেখানে তাঁর একটি বাংলোও আছে।