Home Second Lead সাম্বা ঝড়ে বিধ্বস্ত কোরিয়া, ব্রাজিল শেষ আটে

সাম্বা ঝড়ে বিধ্বস্ত কোরিয়া, ব্রাজিল শেষ আটে

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

গোলপোস্টে শটটা নেওয়ার আগে মাথায় বলটা ঝাকিয়ে নিজের আয়ত্তে নেন রিচার্লিসন। জাগলিং করে সতীর্থদের সঙ্গে খেললেন অনবদ্য পাস। সেখান থেকে বল পেয়ে যান থিয়াগো সিলভা। অধিনায়কের ফিরতি পাসে বল পেয়ে সোজা জালে জড়িয়ে গোল করেন চার্লি। যে গোলের পর তারা মেতে উঠেছিলেন সাম্বার তালে। তাতেই ফুটে ওঠে ছবির মতো সুন্দর সাম্বাদের ফুটবল নন্দন। সেই অনবদ্য গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই বাঁ দিক থেকে ভিনিসিয়াসের ক্রসে চলতি বলে শট নিয়ে গোল লোকাস পাকেতা। প্রথমার্ধেই এমন দাপুটে ফুটবলে ম্যাচ শেষ করে দেয় ব্রাজিল।

স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ দক্ষিণ কোরিয়াকে ৪-১ গোলে গুড়িয়ে শেষ আট নিশ্চিত করেছে ব্রাজিল। শেষ ষোলো দিয়েই টানা দুই ম্যাচ পর ব্রাজিলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন। আগের ম্যাচটাতেই শেষ মুহূর্তের গোলে ক্যামেরুনের কাছে হারেন দানি আলভারেজরা। তবে নেইমারের ফেরার ম্যাচে দাপুটে জয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়েছে সেলেসাওরা।

নেইমারকে পেয়েই যেন উজ্জীবিত পুরো ব্রাজিল। শুরু থেকেই ঘায়েল করতে থাকে তারা কোরিয়াকে। একের পর এক আক্রমণ আর গোলে নাকাল করে তুলেন সনদের।

ম্যাচের শুরুতেই রাফিনহার পাসে কোরিয়ার জালে বল জড়ান ভিনি জুনিয়র। ৭ মিনিটের মাথাতেই গোল করে এগিয়ে নেন দলকে। রাফিনের দেওয়া পাসটা সুন্দর করে বক্সের ভেতরে আগলান। অনেকটা সময় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় বলটা জালে জড়ান। তাতে এগিয়ে যায় তিতের শিষ্যরা।

এর তিনিট পর আসে বড় সুযোগ। খেলার ১০ মিনিটের মধ্যেই পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। রিচার্লিসনকে বক্সের ভেতরেই ফাউল করেছিলেন কোরিয়ান ফুটবলার। তাতেই পেনাল্টি শটের সুযোগ পায় হলুদ-নীলরা। সেই শট নেন নেইমার। ১৩ মিনিটে সেই শট থেকে গোলটা কাতার বিশ্বকাপেও নেইমারের প্রথম গোল। এটা আবার টুর্নামেন্টে তার সপ্তম গোল। যে গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ব্রাজিল।

খেলার সময় তখন গড়িয়েছিল ২৯ মিনিটে। তখনই দুর্দান্ত স্কিল দেখা গেল রিচার্লিসনের। মাথায় বল নিয়ে জাগলিং করে সতীর্থদের সঙ্গে অনবদ্য পাস খেললেন। সেখান থেকে বল তার পা থেকে দিলেন সতীর্থ থিয়াগো সিলভাকে। অধিনায়কের পাস গোল করলেন রিচার্লিসন।

তার গোলে প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে এগিয়ে গেছে ব্রাজিল। এই গোলের পর উল্লাস করেছেন সতীর্থদের সঙ্গে। উচ্ছাসের মাত্রাটা এতই বাঁধভাঙা ছিল যে, রিচার্লিসন চলে যান মাঠ থেকে টাচলাইনে। সেখানে কোচ তিতেসহ সাইডবেঞ্চে থাকা সতীর্থদের সঙ্গে মেতে উঠেন সাম্বা নৃত্যে।

সাত মিনিট পর আবারও গোলের দেখা পায় ব্রাজিল। ভিনি জুনিয়রের অ্যাসিস্টে গোল করেন লোকাস পাকেতা। তাতে ৩৬ মিনিটেই চার গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। এই গোলেই যেন ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায়। ৪-০ গোলের ব্যবধান নিয়ে বিরতিতে যায় ব্রাজিল।

বিরতির পর আক্রমণের ধার বাড়ায় কোরিয়া। তাতে ব্রাজিলের আক্রমণের পর কোরিয়ানদের পাল্টা আক্রমণ করতেও দেখা যায়। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে রাফিনহা একাধিক ডিফেন্ডারের মাঝখান থেকে শট নিতে গিয়েছিলেন। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে বাঁচিয়ে দিলেন কোরিয়ান গোলকিপার কিম সিউং। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে বাঁ দিক থেকে ক্রস করেছিলেন কোরিয়ার পাইক সিউং হু। সেই শট দুর্দান্তভাবে সেভ করেন অ্যালিসন। ডান দিক থেকে আর এক ফুটবলারের শট ঝাঁপিয়ে পড়েও বাঁচান তিনি।

এভাবে প্রতিহত করার পর এক পর্যায়ে একটি গোল শোধ করতে পারে দক্ষিণ কোরিয়া। ফ্রি কিক থেকে বল ক্লিয়ার করেছিলেন ব্রাজিলের ডিফেন্ডার। সেই বল সুন্দর রিসিভ করে বাঁ পায়ের জোরালো শট নেন পাইক সিউং হো। সেটাই জড়ায় ব্রাজিলের জালে।

পরে দুই দলই একাধিক সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু কেউই কাজে লাগাতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলও পায়নি আর কোনো গোলের দেখা। তাতে ৪-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল। আগামী ৯ ডিসেম্বর কোয়ার্টার ফাইনালে তারা ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে।