বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
আগের মতো মুনাফা হচ্ছে না। তাই ভারতে গাড়ি উৎপাদন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফোর্ড মোটর কোম্পানি । বিবৃতি দিয়ে ওই সংস্থা বলেছে, গত ১০ বছরে ভারতে তাদের ক্ষতি হয়েছে ২০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। ভারতে ফোর্ড এমন কোনও ব্যবসা করতে চায় যাতে কোম্পানি স্থায়ীভাবে লাভের মুখ দেখবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধীরে ধীরে সানন্দ ও মারাইমালাইতে অবস্থিত দু’টি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ করবে ফোর্ড। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে লাগবে এক বছর। ফোর্ড ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট ও এমডি অনুরাগ মেহরোত্রা বলেন, “ভারতে গাড়ির বাজার যে হারে বাড়বে বলে আশা করা হয়েছিল সেই হারে বাড়েনি। বছরের পর বছর আমরা লোকসানে কারখানা চালিয়েছি।” ফোর্ড মোটর কোম্পানির প্রেসিডেন্ট এবং সিইও জ্যাম ফারলে বলেন, বর্তমানে যাঁরা ফোর্ডের গাড়ি চালান, তাঁদের নিরাশ করা হবে না। তাঁর কথায়, “আমি স্পষ্ট জানাতে চাই, ভারতে আমাদের খদ্দেরদের স্বার্থের দিকে নজর রাখা হবে। আমরা ফোর্ডের ডিলারদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখব। বহু বছর ধরে তাঁরা আমাদের কোম্পানিকে সাহায্য করেছেন।”
একইসঙ্গে ফোর্ড জানায়, তাদের মুসতাং ও আরও কয়েক ধরনের দামি গাড়ি ভারতে আমদানি করা হবে। নতুন হাইব্রিড ইলেকট্রিক কারও তারা ভারতে আমদানি করবে। কিন্তু ফিগো, অ্যাসপায়ার, ফেইস্টাইল, একোস্পোর্ট এবং এনডেভরের মতো গাড়ির বিক্রি ক্রমশ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বেশ কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল এদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে পারে ফোর্ড। কারণ ভারতের যাত্রীবাহী গাড়ির বাজারে তারা বিশেষ প্রভাব ফেলতে পারেনি। ইতিমধ্যে ভারতের বাজারে ঢুকেছে নতুন কোম্পানি কিয়া মোটর ও এমজি মোটর। ২০২০ সালের পর থেকে অতিমহামারীর জন্য গাড়ির চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। বিশ্ব জুড়েই সেমি কন্ডাকটর পাওয়া মুশকিল হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতে গাড়ি উৎপাদন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফোর্ড।
একসময় ফোর্ড চেষ্টা করেছিল যাতে দেশি গাড়ি নির্মাতা সংস্থা মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা যায়। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি।
সেপ্টেম্বরের শুরুতে সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স (সিয়াম)-এর ৬০ তম বার্ষিক সম্মেলনে তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করি, পীযূষ গয়াল ও প্রকাশ জাভড়েকর ঘোষণা করেন, গাড়ি শিল্পের মালিকদের স্বস্তি দিতে আগামী দিনে কমানো হতে পারে পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি)।
কেন্দ্রীয় ভারী ও রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর এদিন গাড়ি শিল্পের মালিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মিটিং করেন। সেখানে বলেন, “অবিলম্বে বাজারে চাহিদা বাড়াতে হবে। জিএসটি কাউন্সিল শীঘ্রই আলোচনা করবে, বিভিন্ন শিল্পকে ছাড় দিলে রাজস্ব কী পরিমাণে কমতে পারে। আমি আশা করি আপনারা ভাল খবর পাবেন।” তিনি ইঙ্গিত দেন, জিএসটি কাউন্সিল সব ধরনের গাড়িতে ১০ শতাংশ জিএসটি ছাড় দিতে পারে। আপাতত বিভিন্ন গাড়িতে পাঁচ থেকে ২৮ শতাংশ পর্যন্ত জিএসটি বসানো হয়েছে।