বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে তবে সত্যিই বরফ গলতে চলেছে?
২০১৯ এ নয়াদিল্লি জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। তারপরই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন স্থগিত করে দেয় পাকিস্তান। কিন্তু সেই পাকিস্তানই এবার নরম হওয়ার ইঙ্গিত দিল। পাকিস্তান ইকনমিক কোঅর্ডিনেশন কাউন্সিল (ইসিসি) ভারত থেকে তুলো, তুলোয় বানানো সুতো আমদানিতে সম্মতি দিয়েছে। পাক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তাদের বৈঠকে এক শীর্ষ কমিটির কাছে সম্মতি চেয়ে আমদানির প্রস্তাব পেশ করা হয়। ইসিসির বুধবারের বৈঠকে ভারত-পাক বাণিজ্য পুনরায় চালুর চেষ্টায় তাতে সম্মতি মেলে। তুলো, সুতো ছাড়া চিনিও ভারত থেকে কিনবে পাকিস্তান। বাণিজ্য ও টেক্সটাইল মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রস্তাবের নির্যাস নিয়ে ইসিসি-র সভায় কথা হয়। ভারত থেকে ০.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন চিনিও আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদন পেয়েছে।
তবে ভারত-পাক বাণিজ্য ফের চালু হওয়ার একটা ইতিবাচক আবহ তৈরিই ছিল। ২৮ ফেব্রুয়ারি ভারত, পাক সেনাবাহিনী জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ও অন্য সব সেক্টরে কঠোর ভাবে যুদ্ধবিরতি পালনে সম্মত হয়। ২০১৯ এর পুলওয়ামা হামলা, সে বছরই আগস্টে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর বিরাট মার খাওয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পুনরুজ্জীবনে সম্প্রতি প্রথম ইতিবাচক পদক্ষেপটি করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে তিনি সেদেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে চিঠি লিখে পড়শী দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের বাসনা প্রকাশ করেন। সন্ত্রাস, বিদ্বেষ, শত্রুতামুক্ত আস্থা, বিশ্বাসের আবহাওয়া থাকা যে জরুরি, আবশ্যিক, তা ব্যাখ্যা করেন। পাল্টা ইমরান তাঁকে লেখেন, জম্মু ও কাশ্মীর সহ যাবতীয় বকেয়া সমস্যা নিরসনে গঠনমূলক, ফলমুখী আলোচনার পরিবেশ তৈরি করা দরকার। আমরা বুঝেছি, ভারত, পাকিস্তানের মধ্যে সব বিবাদ, বিরোধ, বিশেষতঃ জম্মু ও কাশ্মীর বিতর্ক সমাধানের জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা থাকা দরকার।
এই প্রেক্ষাপটেই বাণিজ্যিক লেনদেনের বন্ধ দরজা পুনরায় খোলার মুখে। বলা হচ্ছে, পাকিস্তানের তুলোর ফলন কম হওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। যেজন্য ভারতের মুখাপেক্ষী হয়েছে তারা। ইমরান সরকারের নিষেধাজ্ঞা তোলার সিদ্ধান্তে দেশের টেক্সটাইল সেক্টরের কাছে আনন্দের খবর। তারা সস্তায় কাঁচামাল চায়। যদিও পাকিস্তানেরই টেক্সটাইল শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কিছু মহল বলছে, সরকারি সিদ্ধান্তে ক্ষতি হবে দেশের কৃষকদের। তাদের বক্তব্য, আমরা ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় তুলো মধ্য এশিয়া ও বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করেছি। তাই এই অনুমোদনের দরকারই ছিল না। যদিও ভারত থেকে তুলো আমদানির সিদ্ধান্তে যুক্তিসঙ্গত রেটে ঘরোয়া চাহিদা পূরণে সাহায্য করবে বলে দাবি সরকারি কর্তাদের।