চট্টগ্রাম:নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলা থেকে ভাসানচরকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানবন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে হাতিয়া ছাত্র যুব পরিষদ।
বুধবার ( ৯ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে সংগঠনটি। এতে হাতিয়া বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ অংশ নেয়।
মানবন্ধনে ভাসানচরকে নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের সাথে অন্তর্ভূক্ত করার ষড়ন্ত্রের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা সন্দ্বীপের বাসিন্দা ফাউজুল কবিরকে দায়ী করা হয়। এ সময় বক্তরা তার পদত্যাগের দাবী করেন। ফাউজুল কবিরের পদত্যাগ দাবী সম্বলিত বিভিন্ন প্লাকার্ড ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নিতে দেখা যায় হাতিয়ার লোকজনকে।
এছাড়া ভাসান চর নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধ করো করতে হবে, আমার মাটি আমার ঘর ভাসান চর ভাসান চর, হাতিয়াবাসী জাগো ভাসানচর রক্ষা কর, ভাসানচর নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী উপদেষ্টা ফাউজুল কবিরের পদত্যাগ চাই সহ বিভিন্ন ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয় হাতিয়ার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন।
উপদেষ্টা ফাউজুল কবিরের সমলোচনা করে বক্তরা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ফাউজুল করিব সারাদেশের উপদেষ্টা। তার জন্মস্থান সন্দ্বীপ হওয়ায় মিমাংসিত একটি বিষয়কে উসকে দিচ্ছেন। এতে তিনি প্রমাণ করেছেন তিনি বাংলাদেশের উপদেষ্টা নন। তিনি সন্দ্বীপের উপদেষ্টা।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম এর সমন্বয়ক তানভীর শরীফ, এডভোকেট আকতার হোসেন, এডভোকেট মাহবুবুল রহমান, সাইফুল মনির হাতিয়া ছাত্র ও যুব পরিষদের সাবেক সভাপতি আকতার হোসেন, হাতিয়া ছাত্র ও যুব পরিষদ সভাপতি সব্বির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক সাবের প্রমুখ।
মানববন্ধনে বিক্ষুদ্ধ হাতিয়ার বাসিন্দারা বলেন, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ভাসানচরকে হাতিয়া উপজেলার অনুকূলে দিয়ারা জরীপ সম্পাদন করে চূড়ান্ত রেকর্ড প্রকাশ ও হাতিয়া উপজেলাধীন চরঈশ্বর ইউনিয়নের অন্তর্গত ভাসানচর থানা গঠন শান্তিপূর্ণ ও বিরোধ ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে। একটি কুচক্রী মহল অত্র অঞ্চলের শান্তি ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার অপপ্রয়াসে ভাসানচরকে একটি ইস্যু হিসেবে সামনে এনেছে যা অনভিপ্রেত।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৯৬০-এর দশক হতে হাতিয়ার নদী ভাঙন সমস্যা তীব্রতর হয়ে ওঠে। ভাঙনে বিগত প্রায় ৬৮ বছরে হাতিয়ার বিশাল এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ‘সাহেবানীর চর’ নামে হাতিয়ার পূর্ব পার্শ্বে একটি চর ভেঙে সম্পূর্ণরূপেই বিলীন হয়ে গেছে মেঘনায়। আজকের ভাসানচর মূলত ভেঙ্গে যাওয়া সাহেবানীর চর, রাধাখালি, চিত্রাখালি, বাথানখালি, মাইজচরা, চরভারতসেন, চৌরঙ্গী, মফিজিয়া সুখচর, নলচিরা, গোডাউন বাজার এর জেগে উঠা চর।
ভূমি রেকর্ড ও জরীপ অধিদপ্তরের অনুমোদনক্রমে ২০১৬-২০১৭ সালের দিয়ারা জরীপে নবসৃষ্ট ভাসানচর অংশটি সঠিকভাবে হাতিয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। গেজেটে ভাসানচর অংশের ৬টি মৌজা নোয়াখালী জেলাধীন হাতিয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ২০১৮ সালে জনৈক সন্দ্বীপবাসীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আইন ভিত্তিক সমাধানের জন্য রুল জারি করে। পরবর্তীতে সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে গত ০৯/০২/২০২১ সালে ভাসানচরকে হাতিয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট নোটিশ জারি হয়েছে।
-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি