Home আইন-আদালত ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আদালতে সু চি

ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আদালতে সু চি

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

মিয়ানমারের জান্তা সরকার ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আদালতে হাজির করেছে ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিকে।

সোমবার (১ মার্চ) বিচারের জন্য ভিডিওর মাধ্যমে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

সু চির আইনজীবীর বরাতে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, রাজধানী নেপিডোর একটি আদালতে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে সু চিকে হাজির করা হয়েছে। গেল ৩ ফেব্রুয়ারি সু চির বিরুদ্ধে মামলা করে সামরিক সরকার।

এ দিকে রবিবার ওই সহিংসতা ও রক্তপাতের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশ এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধি। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে নিরাপত্তা বাহিনীর নজিরবিহীন দমন-পীড়ন ও গণগ্রেপ্তার গ্রহণ যোগ্য নয়।

রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিনভর জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় প্রধান শহরগুলো।

পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও। ঘটনাটিকে সামরিক বাহিনীর প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ)। একই সঙ্গে হতাহতের ঘটনার জেরে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে জোটটি। এরই মধ্যে অভ্যুত্থানের জেরে মিয়ানমারে সব ধরনের সহায়তা বন্ধের পাশাপাশি দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে একমত হয়েছেন ইউরোপের দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

শনিবারের ধারাবাহিকতায় রবিবারও দেশটির প্রধান শহরগুলোর রাস্তা ছিল উত্তাল। সময় গড়ানোর সাঙ্গে সঙ্গে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ রূপ নেয় সহিংসতায়। সকাল থেকে বিক্ষোভ দমাতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে গেলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি ও স্টান গ্রেনেড ছুড়লে, পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়। মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ইয়াঙ্গুন ও দাওয়েই শহর। একে একে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। সেই সঙ্গে চলে গণগ্রেপ্তার।

একই পরিস্থিতি আরেক শহর ম্যান্দালেতেও। সাধারণ বিক্ষোভকারীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিলে সেখানেও বাধা দেয় দাঙ্গা পুলিশ। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করেই দিনভর চলে বিক্ষোভ।

অন্য দিকে রাজধানী নেপিডোতে জান্তা সরকারবিরোধী মোটরর‍্যালি বের করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় অবিলম্বে দেশটির নেত্রী অং সান সু চির মুক্তির দাবির পাশাপাশি নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে সামরিক সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।

মিয়ানমারে গেল বছরের ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। তবে এনএলডি নিরঙ্কুশ জয় পেলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। তারা নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে।

১ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে ওইদিন ভোরে স্টেট কাউন্সেলর অং সান সূ চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ এনএলডির শীর্ষ বেশকিছু নেতাকে গ্রেপ্তারের পর এক বছরের জন্য মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী। ক্ষমতায় বসেন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং।

সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের পর গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও গ্রেপ্তারকৃত নেতাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে সাধারণ মানুষ।

তবে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী বলছে, বিক্ষোভ ঠেকাতে তারা ন্যূনতম শক্তি প্রয়োগ করছে।