বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘সাধারণ মানুষকে প্রস্তুত এবং সতর্ক থাকতে হবে।’ যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় একটি বিধ্বংসী ভূমিকম্প হতে পারে হিমালয় এলাকায়।
বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
চলতি মাসে এই নিয়ে মোট তিন তিনবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল নেপাল। শুক্রবার রাতে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৪। বড়সড় এই ভূমিকম্পের জেরে কেঁপে উঠেছে ভারতের দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, বিহার। এ হেন পরিস্থিতিতে চরম আশঙ্কাবাণী ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞের। যে কোনও মুহূর্তে বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ধ্বংস হতে পারে বিস্তীর্ণ এলাকা। আর তার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
নেপাল এই মুহূর্তে একটি সক্রিয় শক্তি নির্গমণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। আর তার জেরেই এই ঘন ঘন ভূমিকম্প। এমনটাই জানাচ্ছেন ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির প্রাক্তন অধ্যাপক এবং ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অজয় পাল। তিনি বলেন, ‘নেপালের দোতি জেলার কাছেই শুক্রবার রাতে জোরাল কম্পন হয়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসেও ঠিক একই এলাকাতে ৬.৩ রিখটার স্কেল মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছিল।’ তবে এ ক্ষেত্রে মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে।
অজয় পালের কথায়, শুক্রবার রাতে একটি নয়, পরের পর কম্পন অনুভূত হয়েছে নেপালে। একই এলাকায় আফটারশক হয়েছে। এই এলাকাটি নেপালের একদম মধ্যবর্তী অংশ। কিছুটা পশ্চিম ঘেঁষা।
বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘সাধারণ মানুষকে প্রস্তুত এবং সতর্ক থাকতে হবে।’ যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় একটি বিধ্বংসী ভূমিকম্প হতে পারে হিমালয় এলাকায়।
কিন্তু, কেন এমনটা ঘটবে? অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, ভারতীয় টেকটনিক প্লেট এবং ইউরেসিয়ান প্লেটের ক্রমাগত সংঘর্ষের ফলে এই মুহূর্তে স্পর্শকাতর পরিস্থিতি তৈরি হয়ে রয়েছে। ভারতের এই টেকটনিক প্লেট ক্রমশ উত্তর দিকে সরছে। আর এর জেরেই প্রবল ভূমিকম্পের আশঙ্কা করা হচ্ছে যে কোনও মুহূর্তে।
ভারত মহাসাগরে ভারতীয় প্লেট উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে ইউরেসিয়ান প্লেটের সঙ্গে ধাক্কা খায় আনুমানিক চার থেকে পাঁচ কোটি বছর আগে। সে সময়ই তৈরি হয় হিমালয় পর্বত।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভারতীয় টেকটনিক প্লেট এখনও উত্তরদিকে একটু একটু করে অগ্রসর হওয়া বজায় রেখেছে। ইউরেসিয়ান প্লেটের সঙ্গে এখনও মাঝে মধ্যেই তার সংঘর্ষ তৈরি হচ্ছে। এর ফলে হিমালয়ের পাদদেশে ক্রমশ ভয়ংকর চাপ তৈরি হচ্ছে। এই চাপের কারণেই একের পর এক কম্পন তৈরি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রা ভূমিকম্প হতে পারে যে কোনও সময়। তবে ঠিক কোন সময় এই ভূমিকম্প হতে পারে, তা এখনও স্পষ্টভাবে জানাননি বিজ্ঞানীরা।