ভোলা সদর হাসপাতালে শয্যা সংকটের কারণে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে মেঝেতে। হাসপাতালে নোংরা পরিবেশের সঙ্গে ঠিকমতো ওষুধ ও চিকিৎসা পাচ্ছে না তারা।
মহিউদ্দিন, ভোলা: দ্বীপ জেলা ভোলায় শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। গত কয়েক দিন থেকে বয়ে যাওয়া হিমেল হওয়া সঙ্গে ভারী কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীতের তীব্রতা বাড়ার কারণে প্রতিদিন বিভিন্ন বয়সী রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হওয়া শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি।
এছাড়াও বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এমন বৈরী আবহাওয়ায় প্রতিনিয়ত ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলছে। শিশু ওয়ার্ডের শয্যা সংখ্যা ২৪। অথচ গড়ে ভর্তি থাকছে ৫০-৭০ জন। ফলে এক বেডে ২ থেকে ৩ জন করে রাখতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টরা।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ হাসপাতালে এসে ঠিকমতো চিকিৎসা ও ওষুধ পাচ্ছে না তারা। পাশাপাশি শয্যা সংকটের কারণে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে মেঝেতে। হাসপাতালে নোংরা পরিবেশের সঙ্গে ঠিকমতো ওষুধ ও চিকিৎসা পাচ্ছেনা তারা।
শিশু ওয়ার্ডে কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স (ইনচার্জ) রোজিনা ইসলাম বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে রোগী বেড়েছে। প্রতিদিনই ছাড়পত্রের তুলনায় নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এতে করে হাসপাতালে জনবল কম থাকায় ঠিকমতো চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, এই অবস্থায় জনবল বৃদ্ধি করার দাবি জানান তিনি।
অভিভাবকদের শীতের সময়ে নবজাতকের ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে ভোলা সদর হাসপাতাল সিনিয়র কনসালটেন্ট ( শিশু বিশেষজ্ঞ) ডা. সালাউদ্দিন জানান, আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শিশুদের শীতজনিত রোগের প্রকোপ একটু বৃদ্ধি পায়। এ সময়ে শিশুদের ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। এ ছাড়াও নিউমোনিয়া তো থাকেই। এই সময়টায় বাচ্চাদের নিউমোনিয়া থেকে বাঁচাতে হলে ঠাণ্ডা থেকে দূরে গরম কাপড় পরিয়ে রাখতে হবে। পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। তাতে শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। আর ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে হলে ময়লা ও জীবাণু থেকে দূরে থেকে সবসময় সাবান দিয়ে শরীর পরিষ্কার রাখতে হবে। এবং শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। মায়ের বুকের দুধ নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়।
আর ভোলা সদর হাসপাতাল এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নিরুপম সরকার সাংবাদিকদের জানান, হাসপাতালে শিশু রোগীদের পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে। পাশাপাশি তাদের চিকিৎসা দেয়া জন্য পর্যাপ্ত মেডিকেল অফিসার ও শিশু বিশেষজ্ঞ রয়েছে। তবে প্রতিদিনের রোগীর তুলনায় শিশু ওয়ার্ডের শয্যা সংকট রয়েছে। বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।