Home Second Lead ভোলায় রাস্তার ধারে পড়েছিল মহাবিপন্ন হিমালয়ী শকুন

ভোলায় রাস্তার ধারে পড়েছিল মহাবিপন্ন হিমালয়ী শকুন

উদ্ধার হওয়া হিমালয়ী শকুন।
মহিউদ্দিন ভোলা, ভোলা থেকে:  ভোলায় ধরা পড়েছে হিমালয়ান বিলুপ্ত প্রাণী শকুন। এটি বিলুপ্ত হিমালয়ান গৃধিনী প্রজাতির শকুন বলে জানিয়েছেন বন্যপ্রাণী কর্মকর্তা।
ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ভোলা-লক্ষীপুর মহাসড়কের তুলাতুলি এলাকা থেকে শকুনটি উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, দুপুর ১টার দিকে শকুনটি উড়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ ভোলা-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কের রাস্তার পাশে পড়ে যায়। শকুনটি দেখতে স্থানীয়রা ভিড় জমান। পরে বন বিভাগকে খবর দিলে তারা এসে এটি উদ্ধার করেন।
 ভোলা বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, হিমালয়ান গৃধিনী ভালচার নামের এই শকুনটি খাবারের সন্ধানে পথ হারিয়ে উড়তে উড়তে দুর্বল হয়ে নিচে পড়ে যায়। আমরা এটিকে খাবার ও চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ্ করার চেষ্টা করছি। সুস্থ্ হলে অবমুক্ত করে দেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, এ শকুন সাধারণত হিমালয় ও পাহাড়ি অঞ্চলে থাকে। বিলুপ্ত প্রজাতির শকুন এটি। ভোলা বন বিভাগের বণ্যপ্রাণী ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা আরও জানান,  বিলুপ্ত দুটো শকুনই উদ্ধার করা হলো এ বছর ভোলায়।
 উল্লেখ্য, গত ১০ জানুয়ারী ভোলার লালমোহন থেকে মহাবিপন্ন হিমালয়ান গৃধিনী ভালচার প্রজাতির শকুন উদ্ধার করে অবমুক্ত করেছে বন বিভাগ। পরদিন চরফ্যাশন রেঞ্জের চরকচ্ছপিয়া এলাকায় বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে সেই শকুনটি অবমুক্ত করা হয়।
হিমালয়ী গৃধিনী বিশ্বে বিপদমুক্ত ও বাংলাদেশে মহাবিপন্ন বলে বিবেচিত। ১৯৭৪ সালের বন্যপ্রাণি আইনে এ প্রজাতিকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়নি।

হিমালয়ী গৃধিনী প্রজাতির এই শকুনগুলো বাংলাদেশে সচরাচর দেখা যায় না। ধারণা করা হচ্ছে, উত্তরে প্রচণ্ড শীতের কারণে হিমালয় থেকে শকুনটি খাবারের সন্ধানে ভোলায় এসেছে। শকুনটি হিমালয়ী গৃধিনী প্রজাতির। হিমালয়ী শকুন বা হিমালয়ান গৃধিনী প্রজাতির শকুন সাধারণত হিমালয় পার্বত্য এলাকায় বাস করে। প্রতিবছর শীতের এই সময়ে বাংলাদেশে পরিযায়ন করে। আইইউসিএন এর রেড লিস্টের অবস্থান অনুযায়ী এই প্রজাতির শকুন প্রায় সংকটাপন্ন। এই প্রজাতির শকুন নিকট ভবিষ্যতে বিপদাপন্ন তালিকাভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পৃথিবীতে দ্রুততম বিলুপ্ত হতে চলা প্রাণী শকুন। তাই শকুনমাত্রই বিশ্বে ‘মহাবিপন্ন’। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ অব ভেটেনারি মেডিসিনের অধ্যাপক লিন্ডসে ওক তার এক গবেষণায় দেখতে পান, শকুন বিলুপ্তির অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে গবাদিপশুর চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কেটোপ্রোফেনের ব্যবহার। এই ওষধু ব্যবহারের পর পশুটির মৃত্যু হলেও মৃত পশুর দেহে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়ে যায়। শকুন ওই মৃত খাওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ওষুধের প্রভাবে মারা যায়।

বাংলাদেশে শকুনের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) হিসেবে বাংলাদেশে মাত্র ২৬৮টি শকুন রয়েছে।