যেন একের পর এক বিপর্যয় দিয়েই শুরু হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার নতুন বছর। দিন কয়েক আগেই আস্ত একটি বিমান ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছে সকল যাত্রীর। এবার ধাক্কা দিল ভয়াবহ ভূমিকম্প। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ইন্দোনেশিয়া। কমপক্ষে ১০ জন ইতিমধ্যেই মৃত বিপর্যয়ে। গুরুতর আহত প্রায় হাজার মানুষ। ভেঙে পড়েছে অসংখ্য বাড়ি।
সবচেয়ে মর্মান্তিক বিষয় হল, ভূমিকম্পের ধাক্কায় একটি হাসপাতাল ভেঙে পড়ার খবর মিলেছে, ধ্বংসস্তূপে আটকে আছেন রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। অন্তত তিন জন সেখানেই মারা গেছেন বলেও আশঙ্কা। সব মিলিয়ে বিধ্বস্ত পরিস্থিতি ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি আইল্যান্ডে। চারদিকে হাহাকারের রোল উঠেছে। একের পরে এক প্রাণহানির খবর আসছে। এ সবেরই মধ্যে আফটারশকের ভয়ে সিঁটিয়ে আছেন মানুষ। যদিও এখনই সুনামির আশঙ্কা নেই বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ইন্দোনেশিয়া। এর পরে শুক্রবার গভীর রাতে, একটা নাগাদ ফের বড় ভূমিকম্প ধাক্কা দেয়। গভীর রাতে, প্রবল আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন বাসিন্দারা। একের পর এক বাড়িতে ফাটল ধরতে থাকে। বহু বাড়ি চোখের সামনে ভেঙে পড়ে হুড়মুড়িয়ে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার মাজেনা শহর থেকে ৬ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে রয়েছে এই ভূমিকম্পের এপিসেন্টার। কম্পনের মাত্রা ছুঁয়েছে ৬.২ ম্যাগনিটিউড। বৃহস্পতিবার রাতে কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.৯ ম্যাগনিটিউড। গভীর রাতের ধাক্কাটি আর একটু জোরালো। সাত সেকেন্ড স্থায়ী ছিল কম্পন। উপর্যুপরি দুটি ভূমিকম্পের জেরে সাংঘাতিক পরিস্থিতি সেখানে।
সরকারি সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জনের বেশি। গুরুতর আহত প্রায় হাজার জন। বহু জনকে উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আশঙ্কা, আরও অনেকগুলি বাড়ি ভেঙে পড়তে পারে, যেগুলিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। এভাবেই ভেঙে পড়েছে একটি হাসপাতাল। আশঙ্কা, এর পরে যদি আফটার শক ঘটতে থাকে, তাহলে বিপুল বিপর্যয় আসতে চলেছে দেশটির বুকে।
ইন্দোনেশিয়ার এই ভূমিকম্পের একাধিক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ইতিমধ্যেই। স্থানীয়দের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে খোলা জায়গায় যাওয়ার জন্য ছোটাছুটি করতে দেখা গিয়েছে। একটি ছোট্ট শিশু আটকে গিয়েছে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে, সেই ছবি ভাইরালও হয়েছে।
প্রশাসন জানিয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার সড়কপথগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যুত পরিবহণও। এখনও নানা জায়গায় ধস নামছে বলে খবর এসেছে। আরও বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা।
-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক