বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
প্রথমবারেই মঙ্গল জয় করে ফেলেছে চিন। আর কোনও দেশ যা পারেনি তাই করে দেখিয়েছে চিনের মহাকাশযান। কোনওরকম ভুল না করেই সাবধানে মঙ্গলের দুর্গম জায়গায় মাটিতে অবতরণ করেছে চিনা যানের ‘ঝুরং’ রোভার। এখন দুই ক্যামেরা লাগানো ডানা মেলে পাখির মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে লাল গ্রহে। চাকার দাগ ফেলছে মাটিতে। মঙ্গলে ‘চিনের ছাপ’ তৈরি করছে রোভার, এমনটাই জানিয়েছে চিনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (CNSA) ।
সৌরশক্তি চালিত ছয় চাকাওয়ালা ২৪০ কেজি (৫৩০ পাউন্ড) ওজনের রোভার মঙ্গলের লাভা-প্রান্তর ‘ইউটোপিয়া প্ল্যানিটিয়া’-তে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করছে। তিন মাস ধরে এই কাজ করবে ঝুরং। আমেরিকার পরে চিনই বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ, যারা মঙ্গলে রোভার চালাচ্ছে সফল ভাবে। পাঁচ বছর আগে, রাশিয়া ও ইউরোপের যৌথ অভিযানে তাদের ল্যান্ডার সফ্ট ল্যান্ডিং করতে ব্যর্থ হয়ে আছড়ে পড়েছিল। রাশিয়া-আমেরিকার অনেক পরে শুরু করেও চিন এখন মহাকাশ চর্চায় প্রথম সারিতে।
চিনের ঐতিহাসিক মঙ্গল-যাত্রী শুরু হয়েছিল ২৩ জুলাই। নাসার পারসিভিয়ারেন্স রোভারের আগেই চিন তাদের লং মার্চ ৫বি রকেটে চাপিয়ে ‘তিয়ানওয়েন ১’ মহাকাশযান পাঠিয়ে দিয়েছিল লাল গ্রহের পথে। হাইনান দ্বীপ থেকে লং মার্চ ৫ রকেটের সফল উৎক্ষেপণ হয়েছে বলে ঘোষণা করেছিল চিনের ন্যাশনাল স্পেস এজেন্সি। পাঁচ টন ওজনের মহাকাশযানের ভেতরেই ছিল অরবিটার, ল্যান্ডার ও ঝুরং রোভার। চিনা পুরাণে ঝুরং হল আগুনের দেবতা। এই নামেই রোভারের নাম রেখেছে চিনা স্পেস এজেন্সি। এই মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘নিহাও মার্স’। কাওকে সম্বোধন করার জন্য নিহাও কথাটা ব্যবহার করা হয় চিনে। ইংরাজি তর্জমা করলে হয় ‘হ্যালো’।
চিনের ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছে, মঙ্গলের মাটিতে অবতরণের পর থেকে চিনের বিশাল পতাকা নিয়ে ঘুরছে রোভার। লাল মাটিতে সেটা পুঁতে আসাই হয়ত লক্ষ্য চিনা বিজ্ঞানীদের। মঙ্গলের দুটি গিরিখাতের ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে ইতিমধ্যেই, একটি স্কিয়াপ্যারেল্লি ক্রেটার ও অন্যটি গিরিখাতে ভরা ভ্যালেস মেরিনারিস। মঙ্গলের কক্ষপথের প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে দুই গহ্বরের ছবি তুলে পৃথিবীর গ্রাউন্ড স্টেশনে পাঠিয়েছে চিনের মঙ্গলযান।