মহাদেবপুর (নওগাঁ) থেকে মো. সোহেল রানা : স্বল্প সময়ের অর্থকরী ফসল গমের প্রতি ঝুঁকছেন দেশের উত্তরাঞ্চলের খাদ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার কৃষকরা। চলতি মৌসুমে উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের গম চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। বাজারে গমের দামও ভাল রয়েছে। এ মৌসুমে চাষিরা অধিক মুনাফ লাভ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উন্নত জাত উদ্ভাবন, উফশী বীজ ব্যবহার, সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং রাসায়নিক সার প্রয়োগে কৃষি খাতে ঘটেছে বিপ্লব। বেড়েছে খাদ্যশস্যের উৎপাদন। স্বল্প সেচে বেশি ফসল উৎপাদন, রাসায়নিক সারের কম ব্যবহার ও অধিক লাভজনক হওয়ায় ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট’ উদ্ভাবিত জাতের গম চাষ করছেন কৃষকরা। তুলনামূলকভাবে অন্য জাতের চেয়ে বারি উদ্ভাবিত জাতের গম চাষে রোগবালাই ও পোকামাকড় এর আক্রমণ খুবই কম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২১-২০২২ মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৫৬০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। এ পরিমাণ জমি থেকে ১ হাজার ৯৭১ দশমিক ২ মেট্রিকটন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
আব্দুর রহমান, লতিফ উদ্দিন, তারেকুর রহমানসহ ১৫-২০ জন গম চাষি জানান, কম খরচে অধিক আয়ের লক্ষ্যে গম আবাদে ঝুঁকছেন তারা। বোরো ধানের চেয়ে গম চাষে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কম হওয়ায় কৃষকের বিনিয়োগ কম, আয় বেশি। প্রতি হেক্টরে গম চাষে খরচ হয় ২২-২৩ হাজার টাকা; ফলন পাওয়া যায় প্রায় সাড়ে ৩ মেট্রিকটন। গত বছরের মতো এবারও বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। বর্তমানে বাজারে প্রতিমন গম ১৩০০-১৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আগামী ৯-১০ দিনের মধ্যে কাটা-মাড়াই শুরু হবে বলেও জানান চাষিরা।
মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় জানান, উচ্চ ফলনশীল জাত চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন। অন্যান্য ফসলের তুলনায় গম চাষে খরচ কম হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি কৃষকরা যেন গম চাষে কোনো সমস্যায় না পড়েন এ জন্য তারা সার্বক্ষণিক নজর রাখছেন। উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।