লিটন ঘোষ, মাগুরা: শিশু ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হিটু শেখ বিভিন্ন সময়ে পুত্রবধূরও শ্লীলতা হানির চেষ্টা করেছে। সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন হিটুর পুত্রবধূ।
রবিবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ঘটনার ২০ দিন আগে সন্ধ্যায় বাড়িতে কেউ ছিল না। তিনি ঘরে আলো জ্বালিয়ে টয়লেটে যান। সেখান থেকে ফিরে দেখেন ঘরে আলো বন্ধ। এ সময় হঠাৎ একজন পেছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরে। উচ্চতা ও অন্যান্য বিষয় দেখে তিনি বুঝতে পারেন, জড়িয়ে ধরা ব্যক্তি তার শ্বশুর হিটু । বিষয়টি স্বামী সজিবকে তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি। পরে বাবার বাড়ি চলে যান। আর স্বামীর বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন না। বাবা-মা বুঝিয়ে ছোট বোনকে সঙ্গে করে পাঠিয়ে দেন শ্বশুরবাড়ি।
ছোটবোনের এই ধর্ষণ কাণ্ডে স্বামী জড়িত বলে দাবি করে সাংবাদিকদের জানান সজিব নিজেই দরজা খুলে দিয়ে তার বাবাকে ঘরে ঢুকতে সাহায্য করেছে।
শিশুটির মা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘স্বামীর অসুস্থতা ও অনটনের কারণে বড় মেয়েকে গত নভেম্বর মাসে বিয়ে দেন। মেয়ের বয়স ১৪ বছর। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। এর পরের মেয়েটির বয়স আট বছর। মেয়ে বোনের বাসায় যেতে চাইছিল না। জোর করে পাঠাইছিলাম। যদি না পাঠাইতাম তাহলে এই অবস্থা হতো না।’
বড় মেয়ে তাঁর শ্বশুরের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আগেও করেছিলেন বলে জানান এই মা। মেয়ের সুস্থতার জন্য তিনি সবার কাছে দোয়া চান। ধর্ষকদের যেন সর্বোচ্চ সাজা হয়, সেটা নিশ্চিত করারও দাবি জানান।
পুলিশ সূত্র জানায়, বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আট বছরের ওই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন শিশুটির মা। মামলায় শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। চার আসামি হলেন- শিশুটির ভগ্নীপতি সজিব (১৮), সজীবের ভাই রাতুল (১৭), তাদের বাবা হিটু শেখ(৪২) ও মা জাবেদা বেগম (৪০)। ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত হিটু শেখের ৭ দিন এবং বাকি ৩ আসামির ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার (৯ মার্চ) মধ্যরাতে রিমান্ড শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন
ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটি গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন রয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেল পর্যন্ত শিশুটির অবস্থা অস্থিতিশীল ও সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। তবে সিএমএইচের চিকিৎসক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শিশুটির চিকিৎসায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।