বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
আফ্রিকার বাইরে এই প্রথম মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। স্পেন ও ব্রাজিলে মাঙ্কিপক্সে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে হাজারের বেশি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। উপসর্গ রয়েছে পাঁচশোর বেশি জনের। মৃত ব্যক্তি গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। তাঁর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এদিকে স্পেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজারের বেশি। হাসপাতালে ভর্তি শতাধিক। দেশে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্বব্যাপী ‘জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা’ জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। রোগের ভরকেন্দ্র এখন ইউরোপ। এখানেই সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে। ইউরোপের দেশগুলিতে সতর্কতা জারি হয়েছে। চলতি বছরের ১৫ জুন থেকে এ পর্যন্ত ইউরোপে নতুন সংক্রমণ বেড়েছে তিনগুণ।
মাঙ্কিপক্স গুটিবসন্তেরই একটা ধরন। কিন্তু আরও বেশি সংক্রামক। মাঙ্কিপক্স ভাইরাস Orthopoxvirus genus পরিবারের। গুটিবসন্ত যে গোত্রের ভাইরাস থেকে হয় মাঙ্কিপক্সও সেই গোত্রেরই। এই ভাইরাসের সংক্রমণেও জ্বর, সারা গায়ে বড় বড় ফোস্কার মতো র্যাশ বের হবে। ত্বক শুকিয়ে খসখসে হয়ে যাবে, প্রচণ্ড চুলকানি, জ্বালা হবে র্যাশের জায়গায়
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মৃত প্রাণীর মাংস, মলমূত্র থেকে ছড়ায় ভাইরাস। আফ্রিকার রডেন্ট বা ইঁদুর জাতীয় প্রাণীই এই ভাইরাসের বাহক। ১৯৫৮ সালে আফ্রিকার এক প্রজাতির বাঁদরের মধ্য়ে এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল, তখনও মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেনি। ১৯৭০ সালে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও নাইজেরিয়াতে এই ভাইরাস প্রথম খুঁজে পাওয়া যায় মানুষের শরীরে। সেই সময় রডেন্ট জাতীয় প্রাণীর মাংস থেকেই ছড়িয়েছিল সংক্রমণ। এখন বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এখন জানা যাচ্ছে যৌন মিলন থেকেও ভাইরাস ছড়াতে পারে. বিশেষ করে সমকামিতা থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় বেশি। বীর্যের মাধ্যমে বাহিত হতে পারে ভাইরাস। আক্রান্তের সংস্পর্শ, শারীরিক মিলন, দেহরস থেকে সংক্রমণ দ্রুত ছড়াতে পারে বলে দাবি গবেষকদের।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সতর্ক করছে, অবাধ যৌনতা, অনিয়ন্ত্রিত যৌন জীবন, একাধিক যৌনসঙ্গী রাখলে সংক্রমণ বাড়তে পারে। তাছাড়া একজন সংক্রমিত হলে তার চুম্বন, যে কোনও ধরনের স্পর্শ থেকে রোগ ছড়াতে পারে। আক্রান্তের সঙ্গে দিনের পর দিন সহবাস করলে রোগের বীজ এক শরীর থেকে অন্য শরীরে ঢুকে যেতে পারে অনায়াসে।