বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত মূল্য ৮৬.০৫ টাকা হলেও ব্যাংকগুলোতে ৮৮.৫০ টাকা থেকে ৮৮.৫৫ টাকা পর্যন্ত ডলার লেনদেন হচ্ছে। অর্থাৎ দামের পার্থক্য ২ টাকার চেয়েও বেশী। ফলে আমদানিকারকদেরকে বিপুল পরিমাণ টাকা অতিরিক্ত পরিশোধ করতে হচ্ছে। খোলা বাজারে ডলারের দাম ৯২.০০ টাকা অতিক্রম করেছে।
চট্টগ্রাম: দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি মাহবুবুল আলম আসন্ন রমজানে ভোগ্যপণ্যের আমদানি ব্যয়সহ শিল্পের কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতির ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে ডলারের মূল্য নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণর ফজলে কবির’র প্রতি ১৪ মার্চ এক পত্রের মাধ্যমে আহবান জানিয়েছেন।
পত্রে তিনি বলেন-মুদ্রাবাজারে টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের অত্যধিক মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েক মাসের ধারাবাহিকতায় ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত মূল্য ৮৬.০৫ টাকা হলেও ব্যাংকগুলোতে ৮৮.৫০ টাকা থেকে ৮৮.৫৫ টাকা পর্যন্ত ডলার লেনদেন হচ্ছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক ও তফসিলি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ডলারের দামের পার্থক্য ২ টাকার চেয়েও বেশী। ফলে আমদানিকারকদেরকে বিপুল পরিমাণ টাকা অতিরিক্ত পরিশোধ করতে হচ্ছে। খোলা বাজারে ডলারের দাম ৯২.০০ টাকা অতিক্রম করেছে। এমতাবস্থায়, পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে ভোগ্যপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাজারে দ্রব্যমূল্যের ক্ষেত্রে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। একই সাথে বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এ পরিস্থিতিতে আমদানিকৃত ভোগ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকগণ এবং ভোক্তা সাধারণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যেসব কাঁচামাল আমদানিতে ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে সেসব ফিনিশড প্রোডাক্ট এর দামও বৃদ্ধি পাবে। মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি শিল্পায়নের গতিকে ব্যাহত করবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে বাজারে বিদ্যমান অস্থিতিশীল অব্যাহত থাকলে ভোক্তাসাধারণ ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের জন্য বিরূপ পরিস্থিতির সমূহ আশংকা রয়েছে।
এ প্রসংগে উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য স্থিতিশীল থাকলেও শুধুমাত্র ডলার মূল্যের পার্থক্যের কারণে পণ্যভেদে প্রতি কেজিতে দুই থেকে পাঁচ টাকা দাম বৃদ্ধি পায়। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিতে নাজুক অবস্থা বিরাজমান। এ সময়ে ডলারের অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধি উল্লেখিত খাতসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে যা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকে পর্যাপ্ত ডলার রিজার্ভ রয়েছে। দেশে ডলারের চাহিদা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ হতে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে ডলার সরবরাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে এ সংকট কাটানো সম্ভব বলে তিনি পত্রে উল্লেখ করেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা, বাজারে স্থিতিশীলতা আনয়ন, শিল্পের কাঁচামাল মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিকারকদের আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষা করা এবং অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধিসহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণরের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানান চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।