Home কৃষি মাল্টা ও লেবু চাষে সাফল্য

মাল্টা ও লেবু চাষে সাফল্য

সোহেল সানী

পার্বতীপুর (দিনাজপুর): সাগর আলী মণ্ডল। ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছেন। নিজ গ্রাম মন্মথপুর ইউনিয়নের তাজনগর মণ্ডলপাড়া গ্রামে মা-বাবার নামে ‘রওশনারা-আজম এগ্রো ফার্ম’ নামে একটি কৃষি খামার করেন তিনি। সেই বাগানে উন্নত জাতের বারী-১ মাল্টা ও পাকিস্তানি ছাতকি মালটার বীজ রোপণ করে চারাগাছ তৈরি করে।

এ ছাড়া সেখানে পাকিস্তানি ছাতকি চায়না থ্রি কমলা, বারো মাসি থাই লেবু, থাই পেয়ারা-৭, গৌরমতি আম, কাশমেরি আপেল কুল, ভারতের বল সুন্দরী বড়ই ও এর পাশাপাশি সাথি ফসল হিসেবে রয়েছে- লেবু, আলু, পেঁয়াজ, বেগুন, লাউ, পেঁপে, পেয়ারা, হলুদ, মরিজ, পটল ও আদাসহ নানান জাতের ফসল উৎপাদন করছেন।  উৎপাদন করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। ১ একর ৫০ শতক জমিতে প্রথমে রসুন, পেঁয়াজ ও বেগুনে লাভ না হওয়ায় পত্রিকা ও টিভি দেখে মাল্টা ও লেবু চাষ শুরু করেন। বর্তমানে আরও এক বিঘা জমিতে ভারতের বল সুন্দরী বরই বাগান রয়েছে।

রবিবার সরেজমিন দেখা যায়, মাল্টা বাগান পরিচর্যায় এলাকার বেকার হৃদয় চন্দ্র দাস ও শাহরিয়ার সায়েম নামে দুই তরুণকে কাজে লাগিয়ে তদারকি করছেন। লেবু কিনতে আসা মোখলেছুর রহমান জানান, ১ হাজার লেবু তিন হাজার টাকায় কিনে নিচ্ছেন। যা গত মাসে প্রায় ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।

বেসরকারি কোম্পানির ম্যানেজার সাগর আলী মণ্ডল জানান, ২০১৯ সালে ১৩ এপ্রিল জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার হাজি জামিল নার্সারি থেকে ৪০ হাজার টাকায় ২৫০ টি মাল্টার চারা কিনে এনে রোপণ করেন। এক বছর ৫ মাস পর ২৩০ টি গাছে ১০/১৫টি করে ফল আসে। ফলগুলো পাকার পর খুবই মিষ্টি হয়। জীবনে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হতে প্রথমে মৎস্য চাষ শুরু করেন। মাল্টা যেহেতু বছরে একবার ফলন আসে তাই কম সময়ে ফলনযোগ্য অর্থকরী ফসল লেবুর আবাদ করে তিনি।

 আরও জানান, এ ছাড়া ১ হাজার ৮০০ জাম্বুরা ও ৩০০ লেবু গাছ রয়েছে। এ অঞ্চলের মাটি মাল্টা ও লেবু চাষের জন্য বেশ উপযোগী।

মন্মথপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুল রহিম জানান, মাল্টা ও লেবু কম খরচে বেশি উৎপাদনশীল অর্থকরী ফসল। পার্বতীপুরে এটি উল্লেখযোগ্য কৃষি বাগান। তারা সার্বক্ষণিক তদারকি ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

পার্বতীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাকিবুজ্জামান বলেন, পার্বতীপুর উপজেলায় আরও কয়েকটি এলাকায় মাল্টার ছোট ছোট বাগান রয়েছে। তবে, এলাকার সাগর আলী মণ্ডলের মাল্টার বাগান সবচেয়ে বড়। তার মাল্টার বাগান পরিদর্শন করেছি। এ দেশে মাল্টা চাষ বাড়তে থাকলে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না। দেশে বারি মাল্টা-১ এর চাহিদা বাড়ছে। এই জাতের মাল্টা খেতে মিষ্টি ও সুস্বাদু। এ মাল্টার পেছনে পয়সার মতো চিহ্ন থাকে। সাগর আলী মণ্ডলের বাগান দেখে অনেকেই মাল্টা ও লেবু চাষে উৎসাহী হচ্ছেন।