Home স্বাস্থ্য এই শীতে বাড়িতে বয়স্ক মা-বাবাদের যত্ন যেভাবে নেবেন

এই শীতে বাড়িতে বয়স্ক মা-বাবাদের যত্ন যেভাবে নেবেন

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে যেমন করে বাড়ির বাচ্চাদের যত্ন নিতে হয়, তেমনই যত্ন-আত্তির প্রয়োজন পড়ে বাড়ির বয়স্কদেরও। আসলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনের মধ্যে একরকমের ছেলেমানুষি কাজ করে। ফলে প্রবীনদের মধ্যে নিজের খেয়াল বা যত্ন নিতে চান না। ফলে শীতের সময় গরম জামা-কাপড়, ত্বকের যত্ন, খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে তেমন যত্নবান হন না।

এর ফলে নিজেদের সমস্যা নিজেরাই তৈরি করে ফেলেন। এই সময় কমতে থাকে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা, শরীর নতুন প্যাথোজেনের সঙ্গে লড়াই করতে পারে না সাবলীলভাবে। তাই কোন কোন বিষয়ে যত্ন নেবেন জেনে নিন সে ক্ষেত্রে পরিবারের মানুষ যদি এই বিশেষ কয়েকটি বিষয়ে যত্নবান হন তা হলে সমস্যা এড়ানো যায় অনেকটাই। শীতে বয়স্কদের শ্বাসকষ্ট, ব্যথা বাড়তে থাকে। তাই এই সময়টা বাড়ির বয়স্ক মানুষদের একটু যত্ন নেওয়া জরুরি।

​রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়

প্রবীণরা প্রায়শই দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাওয়ায় সংক্রমণের ঝঁকি বেড়ে যায় অনেকটাই। এ ছাড়া তাপমাত্রা হ্রাস হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে শরীরে হাইপোথার্মিয়া তৈরি করার চেয়ে দ্রুত তাপ হারাতে থাকে। শরীরের তাপমাত্রা কম হলে, রক্তনালীগুলো সংকুচিত হয়ে যায়, যার ফলে পুরো শরীরে অক্সিজেন পৌঁছান কঠিন হয়ে পড়ে। বয়স্কদের মধ্যে যদি এই অবস্থা গুরুতর হয়ে ওঠে, তবে এর থেকে হার্ট অ্যাটাক, লিভারের ক্ষতি এবং স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়াও, শ্বাসকষ্টের সমস্যা এবং হাঁপানির সমস্যা বাড়ে। শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার অভাবের কারণে ত্বকের শুষ্কতাও দেখা দেয় যার ফলে ডিহাইড্রেশন হয়ে যেতে পারে।

​সক্রিয় রাখার চেষ্টা করুন

ঠান্ডার সময় সকাল ও রাতের দিকে বাড়ির ভিতরে থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে ঘরের ভিতরে শারীরিক ক্রিয়াকলাপ যেন করা হয়। প্রয়োজনে কিছুটা হাঁটাহাঁটিও করা যেতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে সবসময় যেন গরম জামা বা বেশি পরিমাণে জামাকাপড় পরে শরীরকে গরম রাখা যায়। তার জন্য মোটা জামাকাপড়ের সঙ্গে সঙ্গে মাথা-কান-নাক ঢাকা মাফলারও ব্যবহার করা দরকার। কারণ ঠান্ডা হাওয়া এই সমস্ত জায়গা দিয়েই শরীরে প্রবেশ করে। অবশ্যই বুক, পিঠ ঢাকা পোশাক পরতে হবে। পাইয়ে মোজাও পরতে হবে।

​হাইড্রেট রাখার চেষ্টা করুন

সাধারণত শীতকালে জলের পরিমাণ কম থাকে এবং বাতাসে আর্দ্রতার অভাবও থাকে। তাই এই ভারসাম্যহীনতা শরীরকে ডিহাইড্রেট করতে পারে। ডিহাইড্রেশন এড়াতে সারা দিন প্রচুর পরিমাণে তরল পান করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

​খাওয়া-দাওয়ায় বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন

শীতে বয়স্কদের ডায়েটে প্রচুর ভিটামিন বিশেষ করে ভিটামিন ডি (দুধ), ভিটামিন বি 12, ভিটামিন সি (সাইট্রাস ফল) এবং ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার, ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড (আখরোট, চিয়া বীজ) গ্রহণের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম এবং ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড সম্পূরকগুলি জয়েন্ট এবং পায়ের ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে। তুলসি, গিলয়, অশ্বগন্ধা, কাঁচা হলুদ, গোলমরিচ এবং পুদিনার মতো ভেষজগুলি গুরুত্বপূর্ণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কাজ করে। সবুজ শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে এবং শরীরে রক্ত সঞ্চালনেও সাহায্য করে। যা ফ্রি র‌্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং কোলেস্টেরল কমাতে উপকারী বলে প্রমাণিত।

ত্বকের যত্ন

শীতকালে বয়স্কদের ত্বকের বিশষ যত্ন নেওয়া দরকার। কারণ তাঁদের ত্বক এমনিতেই অনেক বেশি শুষ্ক থাকে। তাই শীতের দিনে ফেটে যাওয়ার সমস্যা স্বাভাবিক। সে ক্ষেত্রে নিয়মিত গ্লিসারিন, তেল ক্রিম ইত্যাদি ব্যবহার করা উচিত। অনেকেই ক্রিম পছন্দ করেন না। সে ক্ষেত্রে তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।