বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
মিয়ানমারে সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভমুখর দিনগুলোর মধ্যে রবিবার অন্যতম। গুলি করে হত্যা, ধরপাকড় ও নানামুখি দমন-পীড়নের মধ্যেও এদিন লাখ লাখ মানুষ সেনা অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমে এসেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রবিবার (৭মার্চ ) ইয়াঙ্গুনের অন্তত তিনটি জায়গায় বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমেছেন। সেখানে পুলিশ গুলি ছুড়েছে এবং আন্দোলনকারী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
ইয়াঙ্গুনের কিয়াউকটাডা শহর থেকে অন্তত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানেও বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমেছেন।
শনিবার পর্যন্ত এক হাজার ৭০০ মানুষকে বন্দি করেছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের রাজনৈতিক বন্দিদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি)। তবে রাতের বেলা অভিযানে আটকদের তথ্য দিতে পারেনি এএপিপি।
এক বিবৃতিতে এএপিপি জানায়, সামরিক সদস্যরা বন্দিদের লাথি-ঘুষি মারছেন। লাঠিপেটা করে গাড়িতে ফেলে রাখছে পুলিশ। এ ছাড়াও বিক্ষোভকারীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি ও ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। অনেককে বাড়ি থেকে আটকও করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।বিক্ষোভকারীদের ধরতে রাতের অন্ধকারে বিক্ষোভকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিযান চালাচ্ছে সামরিক বাহিনী।
এদিকে, মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলীয় দাওয়েই শহরে একজন বিক্ষোভকারী রয়টার্সকে বলেন, ‘তারা (নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা) পাখি হত্যার মতো করে মানুষ হত্যা করছে। এসবের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ জানাতেই হবে। আমরা ঘুরে দাঁড়াবই।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পর থেকে দেশটিতে চলছে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ। রক্তক্ষয়ী এই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক এবং আহত হয়েছেন অনেকে। সেনা অভ্যুত্থানের অবসান এবং দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ সামরিক বাহিনীর হাতে আটক রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, মিয়ানমারে বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৪ জনের বেশি। তবে, অন্যান্য প্রতিবেদনে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চলমান বিক্ষোভের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন ছিল গেল বুধবারে মিয়ানমারের বিভিন্ন নগর ও শহরে ৩৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন।