ইমাম হোসেন, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে: শীতকাল এলেই বাঙালির মনে উঁকি দেয় পিঠার কথা। পিঠা ছাড়া বাঙালির শীত যেনো পরিপূর্ণ হয় না। অল্প পুঁজি ও কম পরিশ্রমে ভালো লাভ হওয়ায় শতাধিক নারী-পুরুষ পিঠা ব্যবসায় নেমে পড়েছেন মীরসরাইয়ে। শীতে রাস্তার মোড়ে মোড়ে পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে গেছে।
লোকজন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে গরম ধোঁয়া ওঠা পিঠা খেতে ভিড় জমাচ্ছেন। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে এ পিঠা বিক্রি। তবে শীতে উপজেলা সদরে অলিগলি থেকে শুরু করে ব্যস্ত ফুটপাতে গড়ে ওঠে কিছু মৌসুমি পিটা-পুলির দোকান। আর এসব দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে গরম ধোঁয়া ওঠা পিঠা খেতে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
উপজেলার বিভিন্ন হাট- বাজার ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার পাশে মাটি ও গ্যাসের চুলা নিয়ে বসেছেন মৌসুমি পিঠা বিক্রেতারা। এসব দোকানে বিক্রি হচ্ছে চিতই ও ভাঁপা পিঠা। গরম-গরম ধোঁয়া ওঠা চিতই পিঠার মূল আকর্ষণ ঝাল-ঝাল ভর্তা। খেজুরের গুড় আর নারকেল দিয়ে তৈরি ভাঁপা পিঠাতেও প্রবল আগ্রহ। মূলত সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে দোকানিরা খুলে বসেন পিঠা-পুলির পসরা। লোভনীয় পিঠার পসরা দেখেই রাস্তার পাশে ভিড় জমে যায় ক্রেতাদের। নাম মাত্র মূল্যে পাওয়া এসব পিঠা।
সরজমিনে উপজেলার করেরহাট,বারইয়ারহাট, জোরারগঞ্জ,মিঠাছড়া, মীরসরাই, বড়তাকিয়া, আবুতোরাব, নিজামপুর, হাদি ফকিরহাট, সহ আরও কয়েকটি স্থানে পিঠা বিক্রির দৃশ্য দেখা গেছে। এসব বাজারের অলিগলি, মোড়ে-মোড়ে জমে উঠেছে পিঠা বিক্রির দোকানগুলো। অফিসগামী কিংবা বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অনেককে দেখা যায় শীতের পিঠার স্বাদ নিতে। অনেকে আবার পরিবারের সদস্যদের জন্যও পছন্দের পিঠা নিয়ে যান।
বারইয়ারহাট ট্রাফিক মোড়ে কথা হয় সমাজকর্মী শাহাদাতের সঙ্গে। তিনি এসেছেন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে। আড্ডা দিতে দিতে রাস্তার পাশে তৈরি হওয়া গরম পিঠা দেখে লোভ সামলাতে পারেন নি তিনি। ধোঁয়া ওঠা ভাঁপা পিঠার স্বাদ নিতে নিতে তিনি বলেন, ‘পিঠাগুলোর স্বাদ একদম ঘরের তৈরি পিঠার মত। চুলা থেকে নামানো মাত্র খাচ্ছি। গরম-গরম খাওয়ার স্বাদই আলাদা।’
বিক্রেতারা জানান, অনেকে বানানো পিঠা এমনিতেই খেতে পছন্দ করেন। অনেকে আবার বাড়তি কিছু গুড় ও নারিকেল দিয়ে খান। কেউ কেউ আবার ভর্তা ছাড়া চিতই পিঠা খেতেই চান না। তাই ক্রেতাদের সুবিধার্থে হরেক রকম পিঠার সাথে রাখা হয়েছে শুঁটকি, কাঁচামরিচ, সরিষা, কালো জিরা, ধনেপাতা, শুকনো মরিচের ভর্তা।