বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: নগরীতে মাস্ক ব্যবহারে সচেতনতা আগের চেয়ে অনেকাংশে বেড়েছে। রবিবার (২৯ নভেম্বর) আন্দরকিল্লা, নিউমার্কেট, জহুর হকার মার্কেট, রেয়াজউদ্দীন বাজার, ডিসি হিলসহ অন্যান্য এলাকায় সরেজমিনে এ চিত্র দেখা গেছে।
পথচারি থেকে শুরু করে রিকশা চালক পর্যন্ত মাস্ক ব্যবহার করছেন। বাদ পড়েনি গণপরিবহনে যাত্রীরাও। আগে পরিবহন শ্রমিকদের মুখে মাস্ক না থাকলেও এখন তাদের কাছেও দেখা গেছে।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করে। সরকারি বেসরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানে মাস্ক বিহীন কোনো সেবা না দেয়ার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ১০টি টিম নগরীর মাঠে নেমেছে। বাড়ানো হয়েছে মাস্কের ওপর জরিমানাও।
জহুর হকার মার্কেটে কাপড় বিক্রেতা আফজাল হোসেন বিজনেসটুডে২৪ কে জানান, আগে ক্রেতাদের মুখে মাস্ক থাকত না। আমরাও পরতাম না। কিন্তু এখন ক্রেতারাই দোকানিদের মাস্ক পরতে বলছে। ভালো লাগছে যে, আমাদের মধ্যে আগের চেয়ে অনেক সচেতনতা বেড়েছে।
আগ্রাবাদ থেকে মার্কেট করতে আসা গৃহবধু সাদিয়া চৌধুরী বলেন, শুধু করোনা সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষার জন্য মাস্ক পরছি তা না। করোনা ছাড়াও মাস্ক আমাদের পরা উচিত। কেননা রাস্তায় যে পরিমাণ ধুলোবালি উড়ছে তা নিশ্বাসের সাথে গিয়ে বুক ব্যাথ্যাসহ অন্যান্য রোগে ভুগতে হচ্ছে আমাদের। মাস্ক থাকলে মোটামুটি কিছুটা রক্ষা হয়।
সংক্রমণ থেকে রক্ষায় মাস্কের কোনো বিকল্প নেই বলে বিজনেসটুডে২৪ কে জানিয়েছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাসান শাহরিয়ার কবির।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের তথ্যমতে, গত তিন মাসে শুধু চট্টগ্রাম নগরীতেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৩০ হাজার। আর মারা গেছে ৩১৬ জন।
এদিকে মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি বিক্রেতাও বেড়েছে। আগে মাস্ক কিনতে ফার্মেসি পর্যন্ত যেতে হলেও এখন হাত বাড়ালেই মিলছে। তিন পিস বিক্রি হচ্ছে দশ টাকায়। তবে সার্জিক্যাল মাস্কের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মনোগ্রাম দিয়ে ছাপানো কাপড়ের মাস্কের ব্যবহার বেড়েছে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একজন বলেন, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশনসহ সংগঠনগুলোর ভুমিকার কারণে আজ সবাই মাস্ক পরছে। যাদের নেই তাদেরও বিনামূল্যে দিচ্ছে। তবে মাস্ক না পরাদের পাশাপাশি বিক্রেতাদেরকেও নজরদারিতে রাখলে ভালো হবে। কেননা এখন এর চাহিদা বেড়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা লাভর জন্য দাম বাড়িয়ে দিতে পারে। যা করোনার প্রথম ঢেউয়ে হয়েছিল।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নগরীতে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষের মধ্যে মাস্ক পরার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নিম্ন আয়ের প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ এখনও সচেতন হতে পারেনি। নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে এখনও করোনা ভীতি প্রভাব ফেলেনি।