Home Second Lead মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার

খুলনা থেকে চন্দন ভট্টাচার্য্য জানান: মুজিববর্ষ উপলক্ষ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৪০ পরিবারকে দুই শতাংশ জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা ঘর উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রবিবার (২০ জুন) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি ঘর পেয়ে দুঃখী মানুষের মুখে যে হাসি, যে আনন্দ; এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কিছু না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সমাজের একদম নিচুস্তরে পড়ে থাকা লোকদের টেনে তোলা, তাদের মূল সমাজের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তি করা।

এসময় খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূশের্দী ভিডিও কনফারান্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় কোনও মানুষ গৃহহীন থাকবে না। আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করে।
খুলনার রুপসা, তেরখাদা ও দিঘলিয়া উপজেলায় আজ আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ২৮৫টি ঘর প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, থানা অফিসার ইনচার্জ সরদার মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ যোবায়ের, ফারহানা আফরোজ মনা, কৃষি কর্মকর্তা মো:ফরিদুজ্জামান, প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো:আরিফ হোসেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাহিরা খাতুন, সমাজসেবা কর্মকর্তা জেসিয়াজামান, বিশিষ্ট ক্রীড়া বিদ আজাদ আবুল কালাম। যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আবু বকর মোল্লার সঞ্চালনায় আরো বক্তৃতা করেন, সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও অধ্যক্ষ ফ ম আ:সালাম, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান বাবুল, সাবেক সদস্য আ: মজিদ ফকির, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ মোরশেদুল আলম বাবু, খান শাহজাহান কবীর, নজরুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বুলবুল, জাহাঙ্গির শেখ, সাধন অধিকারী, এমপির প্রতিনিধি এস এম হাবিব, আকতার ফারুক, আজিজুল হক কাজল, আজমল ফকির, সুব্রত বাগচী, বিনয় হালদার, রাজিব দাস টাল্টু, মুক্তযোদ্ধা রফিক শিকদার, আ:মালেক শেখ, ওলিয়ার রহমান, ওয়াজেদ আলী,মুনসুর বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে ভিডিওতে যুক্ত ছিলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশা ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা রুবাইয়া তাছনিম।

কুড়িগ্রাম থেকে বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি নয়ন দাস জানান: কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায়  প্রথম পর্যায়ে ৭০ আশ্রয়হীন পরিবার ঘর পায় । 
২য় পর্যায়ে রাজারহাট উপজেলায় আরও ৮০ টি পরিবার মুজিব বর্ষের উপহার, ঘর পেয়েছেন ২০ জুন রবিবার। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সুত্রে জানা যায় ১ম পর্যায়ে উপজেলায় ৭০ টি গৃহহীন পরিবরের মধ্যে ০২ শতাংশ করে ভূমির দলিলপত্র সহ একটি করে ঘর উপহার প্রদান করা হয়। 
২য় পর্যায়ে উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নে ৬২ টি, ঘাড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নে  ১৫ টি,বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে ১টি,এবং নাজিম খাঁন ইউনিয়নে ২টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের জন্য ভূমি রেজিষ্ট্রেশন এবং গৃহ নির্মান সম্পন্ন হয়েছে। ২য় পর্যায়ে একই ডিজাইনের বাড়ি নির্মিত হয়েছে ১ লক্ষ ৯১ হাজার টাকায়। বাড়িতে থাকছে রান্না ঘর,সংযুক্ত টয়লেট ও ইউলিটি স্পেসসহ অন্যান্য সুবিধা। 

সরেজমিনে ছিনাই ইউনিয়নে ছিনাইহাট বড় গ্রাম সহ বিভিন্ন  আশ্রায়ন প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, উপহারের ঘর গুলো  অত্যন্ত্য মনোরম ভাবে সাজানো হয়েছে। কেউ কেউ তাদের জন্য বরাদ্দকৃত ঘরে উঠেছেন। 
চারিদিকে উৎসবের আমেজ লক্ষ করা গেছে। সেখানে কথা হয়,মেহেরজান,আমেনা বিবির সাথে তারা বলেন এতদিন হামার থাকার কোন ঘর ছিলোনা মেলা কষ্ট করছি প্রধানমন্ত্রী ঘর দিছে হামরা খুব খুশি হইছি। তার জন্যে হামরা দোয়া করি।
 ছিনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান হক বুলু বলেন এবারে যে ঘর গুলো নির্মিত হয়েছে তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহাদয় এবং উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার সাহেব সার্বক্ষনিক তদারকি করায় কাজের মান ভালো হয়েছে। 
হাবিবুর রহমান (হাবিব) নওগাঁ থেকে জানান, বাংলাদেশের একজন মানুষ ও গৃহহীন থাকবে না” স্লোগানে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় ধাপে নওগাঁয় আরো ৫০২টি গৃহহীন পরিবার পেল মাথা গোঁজার ঠাঁই।

এ উপলক্ষে নওগাঁ সদর উপজেলা অডিটোরিয়ামে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের নওগাঁর উপপরিচালক উত্তর কুমার রায়,  সিভিল সার্জন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম মামুন চিশতী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার হারুন অল রশিদ, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নির্মল কৃষ্ণ সাহা প্রমুখ।
এসময় প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জেলা প্রশাসক মোঃ হারুন অর রশিদ জানান, ১১টি উপজেলার ৫০২টি উপকারভোগীদের হাতে এসব ঘর হস্তান্তর করা হয়।
তিনি আরো বলেন,প্রতিটি ঘরে দুইটি কক্ষ, একটি টয়লেট, রান্নাঘর, কমনস্পেস ও একটি বারান্দা আছে।এসব গৃহ প্রত্যেক পরিবারের জন্য আলাদা করে নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি গৃহ নির্মাণে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা।
এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১০টি, বদলগাছী ৯টি, মহাদেবপুর ৭৬টি, আত্রাই ১০টি, রানীনগর ৩৩টি, মান্দা ২১টি, পতপত্নীতলা ১১৭টি, ধামইরহাটে ২০টি, পোরশা ৭১টি, নিয়ামতপুরে ৭৫টি, সাপাহারে ৬০টি গৃহহীন ও ভৃমিহীন পরিবার এসব ঘর পাবেন।
উল্লেখ্য এর আগে ২৩ জানুয়ারি জেলায় ১ হাজার ৫৬টি গৃহহীন ও ভৃমিহীন পরিবারের মাঝে এসব ঘর করে হস্তান্তর করা হয়।

বীরগঞ্জ( দিনাজপুর) থেকে মো. ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন,বীরগঞ্জ উপজেলায় বিনামূল্যে ২ শতক জমি সহ ভূমিহীন-গৃহহীন ৩৫০ ও আদিবাসী ২০ পরিবারকে সেমি পাকা ঘর উপহার দেওয়ায় তাদের মুখে হাসি ফুটেছে।

বীরগঞ্জ উপজেলার শিবরামপুর ২৫ টি, পলাশবাড়ী ১৮টি, শতগ্রাম ১৫টি, পাল্টাপুর ৪০টি, সুজালপুর ২৩টি, নিজপাড়া ৭১টি, মোহাম্মদপুর ২৫টি, ভোগনগর ২৬টি, সাতোর ৪৬টি, মোহনপুর ২১ ও মরিচা ইউনিয়নে ৪০টি সহ দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩৫০ ভূমিহীন পরিবারকে ঘর প্রদান করা হয়েছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.ডালিম সরকার বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দুই শতাংশ সরকারি খাস জমির ওপর গৃহনির্মাণ করে জমির দলিলসহ ৩৭০ উপকারভোগীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।